আগেও খবরের কাগজে লেখা হয়েছে। লেখালিখির পরে কর্তৃপক্ষের তরফে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এতটুকু হাল ফেরেনি নয়াগ্রামের মুকুল সঙ্ঘ গ্রামীণ পাঠাগারের। আজ, মঙ্গলবার রাজ্যে যখন জাঁক করে গ্রন্থাগার দিবস পালন হবেতখন নয়াগ্রামের এই পাঠাগারে হ্যরিকেনের আলোতেই বই খুঁজবে নবীন পাঠক। বিদ্যুৎ সংযোগটুকুও যে হয়নি আজও। অর্ধেক বইও পোকায় কেটেছে। যত্রতত্র উইয়ের ঢিপি। দেওয়াল থেকে মাটি খসে পড়ছে। টেবিলের উপর রাখা বইয়েও ধুলো জমছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। ভিজে নষ্ট হয় বইপত্র। তবু কারও যেন হেলদোল নেই। গ্রন্থাগারিক চরণ হাঁসদার আক্ষেপ, “কর্তৃপক্ষের কাছে পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে। সংস্কার-কাজ শুরু হবে শুনছি।” |
মেদিনীপুর শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই নয়াগ্রাম। মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই গ্রামেই ‘মুকুল সঙ্ঘ গ্রামীণ পাঠাগার’। দেড় মাস আগে পাঠাগারের নতুন কমিটি হয়েছে। নতুন কমিটির উদ্যোগে পাঠাগার চত্বর একটু সাফসুতরো হয়েছে। কিন্তু, এর বেশি আর কাজ এগোয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে ১৯৬১ সালে তৈরি হয়েছিল এই পাঠাগার। শুরুতে এই পাঠাগারকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের উৎসাহের অন্ত ছিল না। শুধু নয়াগ্রামই নয়, আশাপাশের গ্রামের মানুষও এখানে আসতেন, বই পড়তেন। কিন্তু, বেশ কয়েক বছর ধরেই বেহাল এই পাঠাগার। এখনও অবশ্য সময় পেলেই পাঠাগারে আসে দেবজিৎ মিশ্র, অঞ্জন সেনের মতো এলাকার ছাত্ররা। দেবজিৎ নবম শ্রেণিতে পড়ে। অঞ্জন চতুর্থ শ্রেণিতে। ওদের কথায়, “বই পড়তে ভাল লাগে। তাই সময় পেলেই এখানে আসি। তবে চারিদিকেই ধুলো-নোংরা।” রোজ দুপুরে খবরের কাগজ পড়তে আসেন সুখলাল সেন। তাঁর কথায়, “পাঠাগারের এমন অবস্থা কাম্য নয়। সংস্কারের কাজ এখনই শুরু হওয়া জরুরি।” স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর তিনেক আগে এক বার পাঠাগার সংস্কারের উদ্যোগ হয়েছিল। তার জন্য ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দও হয়। দু’লরি বালি আর ইট আসে। কিন্ত কাজ শুরু হয়নি। নতুন পরিচালন কমিটি অবশ্য পাঠাগারের হাল ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছে। কমিটির সম্পাদক টোটন কর বলেন, “আগের থেকে পরিস্থিতি খানিক বদলেছে। পাঠাগার সংস্কারের জন্য এ বার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
আশ্বাস আগেও মিলেছে। এ বার কাজ হবে তো? প্রশ্নের উত্তর মিলবে ভবিষ্যতেই। |