আমরি-র ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর গত দিন কয়েক পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসাবে আমরা দেখলাম মোমবাতি মিছিল, বিশাল বিশাল ব্যানারে রাজনীতির তল্পিবাহকদের পদযাত্রা, সাংবাদিকদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ। কোনও দিন সরকারি সুযোগসুবিধে না-পাওয়া পঞ্চাননতলা বস্তির অ-নাগরিকরা হয়ে উঠল মানবিকতার নতুন সিলেবাস। মুখ্যমন্ত্রী তাদের মানবিকতা পাঠের যোগ্য সম্মান দানে তৎপর হয়ে তড়িঘড়ি পুরস্কারও দিয়ে দিলেন। স্বভাব-কোমল বাঙালি এবং হুজুগে বাঙালি দুই ভ্যারাইটিই রোজ সকালে সংবাদপত্র হাতে হয় ইশ-উশ করছে নয়তো চায়ের বৈঠকে আড্ডার রসদ জোগাচ্ছে। এত কিছুর পরেও কিছু প্রশ্ন মনের অন্তরালে চাপা পড়ে থাকছে, যার উত্তর আমরা কোনও দিনই খুঁজতে যাব না। অতীতেও যাইনি। আম বাঙালির শোকজ্ঞাপনের ইতিহাস অন্তত তাই বলছে। মাননীয় সরকার বাহাদুর কি আমাদের এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজায় একটু
সাহায্য করবেন?
প্রথমত, আমরি কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে যদি দুর্ঘটনার দায় নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষের উপর বর্তায়, তা হলে দুর্ঘটনায় মৃতদের ক্ষতিপূরণের জন্য কেন সরকারি কোষাগার খুলতে হবে? যে-কোষাগার পূর্ণ হয় জনগণের করের টাকায়, সেই কোষাগার থেকে কয়েকশো কোটি টাকার মালিকদের কেলেঙ্কারির ভর্তুকি কেন দেওয়া হবে? এই দুর্ঘটনার জন্য কি জনগণ কোনও ভাবে দায়ী? বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা কিছু অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ঘটা দুর্ঘটনাগুলি ছাড়া বাকি সময়ে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্রেডিট নেওয়ার রেওয়াজ এ বার বন্ধ করতে হবে। বামফ্রন্ট সরকার এই স্থূল রাজনীতির সূত্রপাত করেছে। মমতা সরকারের যেন আরও বাড়াবাড়ি। |
দ্বিতীয়ত, কোনও শিল্প বা হাসপাতাল বা স্কুল খোলার সময় সরকারের একটা শেয়ার রেখে সংস্থাটিতে সরকারি বা সরকারি সাহায্যপুষ্ট এ রকম একটি ছাপ রেখে দিলে জলের দরে জমি পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ, ফোন, লোন, লাইসেন্স ইত্যাদিও পাওয়া যায় অতি সহজে এবং নামমাত্র মূল্যে। কয়েক বছর পর সংস্থাটি লাভের মুখ দেখতে শুরু করলে রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশে সরকার নিজের শেয়ার গুটিয়ে নেয়। সে সময় লাভের পুরো গুড়টাই খায় বেসরকারি মালিকরা। আমরিতেও তাই হয়নি কি? যদি হয়ে থাকে, তা হলে এই রেওয়াজ এ বার বন্ধ হবে না কি? মানুষ কবে বুঝবে মোমবাতি-মিছিলে শোকপ্রকাশ করা যায়, সমস্যার গভীরে কুঠারাঘাত করা যায় না। এবং কখনও কখনও জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত করার জন্যই রাষ্ট্র নেমে পড়ে মিথ্যা শোকজ্ঞাপনে।
বিপ্লব দাস। স্কুলডাঙা, বাঁকুড়া
|
নিউ টাউনে জল সমস্যার ইতিবৃত্ত |
নিউ টাউনে জল আনতে নয়া ভাবনা’ (৮-১২) এই প্রকল্পকে স্বাগত জানাই। আমি ২০০৫ সাল থেকে নিউ টাউনের একটি আবাসনের বাসিন্দা। চোখের সামনেই এখানে দ্রুত গড়ে উঠছে বড় বড় আবাসন ও অফিস। সেই সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে জনসংখ্যা। অথচ এখানে জলের ব্যবস্থা বলতে যা আছে, তা হল ভূগর্ভস্থ জল। এখানে পি এইচ ই-র বেশ কিছু জলাধারও নির্মাণ হয়েছে। সেখানেও ভূগর্ভস্থ জল তুলে শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু এই ভাবে যথেচ্ছ ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া অত্যন্ত অবৈজ্ঞানিক ও অনুচিত কাজ। তা ছাড়া এর ফলে, উত্তর চব্বিশ পরগনার মতো আর্সেনিক-কবলিত জেলার জলে আর্সেনিক দূষণের সম্ভাবনাও থেকে যায়। তাই গঙ্গার জল পাইপ লাইনে এনে শোধন করে নিউ টাউনে সরবরাহের যে-প্রকল্প সরকার নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। পূর্বতন সরকার এ-ব্যাপারে যে অদ্ভুত প্রকল্প গ্রহণ করেছিল, তার জন্যই নিউ টাউনের জল-সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্পটি ছিল এ রকম যে, প্রথমে ড্রেজিং করে কেষ্টপুর ও বাগজোলা ক্যানালের গভীরতা বাড়ানো হবে। এর পর জোয়ারের সময় স্লুইস গেট খুলে দিয়ে গঙ্গার জল খালে ঢুকিয়ে খালে জলের গতি বাড়ানো হবে। খালের জল সরাসরি নিউ টাউনের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে শোধন করে শহরে সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যাধরী নদীর সঙ্গে ওই সব খালের সংযোগ ঘটানো হবে। খালে শুরু হবে লঞ্চ সার্ভিস। শহরের মধ্য দিয়ে তো লঞ্চ চলবেই, সুন্দরবন পর্যন্ত তার বিস্তার হবে।
গঙ্গা, কেষ্টপুর খাল ও বাগজোলা খাল দিয়ে কত জল বয়ে গেল, কিন্তু অবস্থা যা ছিল তাই। মাঝে দু’-এক দিন কেষ্টপুর খালে লঞ্চে চেপে বাম মন্ত্রীদের সে কী দুরবস্থা। আর, খালের জলে দূষণের মাত্রা দেখে প্রযুক্তিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা রায় দিলেন, এ জল শোধন করে খরচে পোষাবে না।
সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিউ টাউন, কলকাতা-১৫৬
|
বাগুইহাটি ভি আই পি সুপার মার্কেটের মধ্যে স্বল্প পরিসরবিশিষ্ট একটি পোস্ট অফিস আছে। যেটা দেশবন্ধুনগর পোস্ট অফিস কলকাতা-৫৯-এর অন্তর্গত। পোস্ট অফিসের চত্বরে যেখানে সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সাইকেল, মোটর সাইকেল এবং বিভিন্ন দোকানের নানান মালপত্র। ফলে, পোস্ট অফিসের কাউন্টারে পৌঁছানো ভীষণই কষ্টদায়ক।
কোয়েল মোদক। বেলুড় মঠ, হাওড়া-২ |