|
|
|
|
গতি আসেনি শিক্ষক নিয়োগে |
|
প্রেসিডেন্সি নিয়ে দ্রুত এগোক
রাজ্য, চায় মেন্টর গ্রুপ
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
ভাল শিক্ষক পেতে মেন্টর গ্রুপ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ করলেও রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। রাজ্য সরকারের চিন্তা দু’টি বিষয়ে প্রথমত, প্রেসিডেন্সিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার জন্য বাড়তি টাকা কোথা থেকে আসবে। দ্বিতীয়ত, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও তখন একই দাবি জানাতে পারে। এ দিকে মেন্টর গ্রুপ মনে করছে, এই ব্যাপারে দ্রুত ধোঁয়াশা না কাটলে প্রেসিডেন্সিতে শিক্ষক নিয়োগে গতি আনা যাবে না।
প্রেসিডেন্সিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আগামী বছর জানুয়ারির গোড়ায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা না পেলে এই কাজ এগোনো যাচ্ছে না বলে সোমবার জানান উপাচার্য মালবিকা সরকার এবং মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান সুগত বসু। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল শিক্ষক পেতে গেলে ভাল আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া জরুরি বলে এ দিনও জানান সুগতবাবুরা। উপাচার্য বলেন, “এ ছাড়া কী ভাবে ভাল শিক্ষক পাওয়া যাবে এবং তাঁদের ধরে রাখা যাবে? এর জন্য বিশেষ মর্যাদা পাওয়া দরকার।” কিন্তু উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “বিষয়টি নিয়ে সরকার কোনও সিদ্ধান্তই নেয়নি। কারণ, এই ব্যবস্থা চালু করতে হলে অনেক দিক মাথায় রাখতে হবে। রাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হলে অন্যরাও একই দাবি জানাতে পারে। কোন কোন শিক্ষককে বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে, তা কী করে ঠিক করা হবে? তা ছাড়া, ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দিতে গেলেও বাড়তি টাকা প্রয়োজন। সে টাকার সংস্থান হবে কী ভাবে? সবই ভাবা দরকার।”
সুগতবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশিকা মেনেই বেশ কিছু কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উচ্চশিক্ষা দফতরের ওই কর্তা বলেন, “কোন রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, তা জানা নেই।”
প্রেসিডেন্সিকে বিশ্বমানের করে তোলার লক্ষ্যে মেন্টর গ্রুপ তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। সেই গ্রুপ গোড়া থেকেই ভাল শিক্ষক নিয়োগের উপরে জোর দিয়েছে। এ দিনও সুগতবাবু বলেন, “প্রেসিডেন্সিতে এখনই শিক্ষক নিয়োগ করা দরকার। পারলে কাল থেকেই নিয়োগের কাজ শুরু করলে ভাল হত। কিন্তু সরকারের ব্যাখ্যার জন্য কয়েকটি দিন অপেক্ষা করতেই হবে। আশা করছি, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন দিয়ে দেওয়া যাবে।” যদিও তার মধ্যে সরকারের ব্যাখ্যা মিলবে কি না, তা নিয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তাদেরই একাংশ সংশয়ে রয়েছেন।
শুধু বিশেষ মর্যাদা দেওয়াই নয়। প্রেসিডেন্সি কলেজের কোন কোন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় আগ্রহী, তা জানতে যত দ্রুত সম্ভব অপশন ফর্ম দেওয়ার সুপারিশ করেছিল মেন্টর গ্রুপ। অথচ, সেই ফর্ম এখনও হাতে পাননি শিক্ষকেরা। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন বেরিয়েছে। সুগতবাবু সোমবার বলেন, “অপশন ফর্ম সংক্রান্ত নির্দেশিকা বেরিয়েছে। আশা করছি ফর্মগুলিও দ্রুত দিয়ে দেওয়া হবে। তবে এটা ঠিক যে, এই কাজে অনেকটা সময় লাগল।” যদিও উচ্চশিক্ষা দফতরের দাবি, অপশন ফর্ম দেওয়ার কাজে মোটেই বেশি সময় লাগেনি। এক কর্তা বলেন, “অনেক আইনি জটিলতা রয়েছে। সে সব মিটিয়ে তবেই এখন ফর্ম বিলি সংক্রান্ত কাজ শুরু হয়েছে।”
মেন্টর গ্রুপ মনে করে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকে গতি দিতে রাজ্য সরকারের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার। সুগতবাবু এ দিন বলেন, “আমরা প্রথম দফায় যথেষ্ট ভাল সুপারিশই জমা দিয়েছি। এ ব্যাপারে সরকার কী ভাবছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে জানানো প্রয়োজন।” মাতৃবিয়োগের প্রাথমিক শোক কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কাজে যোগ দেওয়ার পরে প্রেসিডেন্সি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন সুগতবাবু। বিশেষ মর্যাদার প্রসঙ্গ নিয়েও তখন আলোচনা হবে বলে এ দিন জানান মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান। |
|
|
|
|
|