উদ্বিগ্ন আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং ইল প্রয়াত
ত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং ইল শনিবার মারা গিয়েছেন। দু’দিন পরে একটি বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে দেশের সরকার। পরমাণু অস্ত্রধর কমিউনিস্ট উত্তর কোরিয়া থেকে এই খবর পাওয়ার পরেই রীতিমতো উদ্বিগ্ন দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা ও জাপান।
কমিউনিস্ট ও ‘মুক্ত’ দুনিয়ার ঠান্ডা লড়াইয়ে শুরুতেই ভাগ হয়ে গিয়েছিল কোরীয় উপদ্বীপ। পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে টানা পোড়েনের ফলে বহির্বিশ্ব থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন কমিউনিস্ট উত্তর কোরিয়ার মানুষ। দেশের একনায়ক কিম জং ইলকে নিয়ে তাই জল্পনা আর গল্পেরও শেষ নেই। উত্তর কোরিয়া সরকার জানিয়েছে, দেশবাসীকে উজ্জীবিত করতে বিশেষ ট্রেনে সফরে বেরিয়েছিলেন কিম জং ইল। ‘প্রচণ্ড মানসিক ও শারীরিক চাপে’ হঠাৎ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। কিম জং ইলের ছেলে কিম জং উনকে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই উনকে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে তুলে ধরেছিলেন কিম জং ইল। তবে কিম জং উন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন রয়েছে।
কিম জং ইল
উত্তর কোরিয়ার নানা কার্যকলাপে বার বার দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে সংঘাত দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়ার তীব্র বিরোধী আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলি। অন্য দেশের সঙ্গে পরমাণু প্রযুক্তির অবৈধ বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে কিম জং ইল সরকারের বিরুদ্ধে। পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির বদলে পাকিস্তানের কাছ থেকে পরমাণু প্রযুক্তি পেয়েছে উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়াকে কোনও ভাবেই পরমাণু অস্ত্রধর হতে দেবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। কিন্তু, আলোচনা প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করে আন্তর্জাতিক চাপ এড়িয়ে যাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল কিম জং ইলের। পুরনো ইয়ংবিয়ন পরমাণু কেন্দ্র বন্ধ করার বদলে আমেরিকার কাছ থেকে প্রচুর পরমাণু জ্বালানি পাওয়ার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। আর এক প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের আমলেও এ ভাবেই মার্কিন চাপ এড়িয়ে গিয়েছিলেন কিম জং ইল। ১৯৮৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিমানে বিস্ফোরণ ঘটায় উত্তর কোরিয়ার গুপ্তচর বাহিনী। তখন থেকেই তাদের নাম রয়েছে সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা দেশগুলির মার্কিন তালিকায়।
কিমের মৃত্যুর পরে সামরিক বাহিনীকে সতর্ক করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর কোরিয়াকে বিশ্বাস করতে রাজি নয় তারা। চিন অবশ্য জানিয়েছে, নতুন জমানাতেও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করতে চায় তারা।
প্রকাশ্যে চিনের সঙ্গেই কিছুটা ভালো সম্পর্ক ছিল কিমের। কিন্তু, প্রয়োজনে তাদের চাপও উপেক্ষা করেছেন তিনি। তাঁর আমলে অর্থনৈতিক দিকে আগের চেয়েও হতশ্রী হয়ে পড়েছে উত্তর কোরিয়া। নব্বইয়ের দশকে রাষ্ট্রের অবহেলায় দুর্ভিক্ষে প্রাণ দিতে হয় বহু দেশবাসীকে।
উত্তর কোরিয়ার রাজনীতির মতোই রহস্যময় কিম জং ইলের জীবন। ১৯৯৪ সালে তাঁর বাবা কিম ইল-সুংয়ের মৃত্যুর পরে ক্ষমতার রাশ হাতে নিয়েছিলেন তিনি। চিন ছাড়া অন্য দেশে বিশেষ যাতায়াত করতেন না কিম। বিমানের বদলে ব্যবহার করতেন বিশেষ ট্রেন। আমেরিকার সঙ্গে শত্রুতা থাকলেও ভালবাসতেন হলিউডের ছবি, বিশেষত জেমস বন্ডের সিরিজ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.