ট্রেনের ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যু ঠেকাতে নিউ ময়নাগুড়ি থেকে নিউ কোচবিহার স্টেশন পর্যন্ত ডবল লাইনের প্রস্তাব দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। শুক্রবার রাতে এক অনুষ্ঠানে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার কেশব চন্দ্র’র হাতে তিনি ওই প্রস্তাব সংবলিত একটি চিঠি তুলে দিয়েছেন।
রেলকর্তারা মনে করেন বিধায়কের প্রস্তাব কার্যকরী হলে আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত লাইনে চাপ অনেক কমবে। সমস্ত মালগাড়ি এবং এক্সপ্রেস ট্রেন নিউ কোচবিহার রুট দিয়ে চালানো সম্ভব হবে। ফলে ট্রেনের ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃতু্যও কমবে। দেবপ্রসাদবাবুর কথায়, “২০০৪-২০১০ পর্যন্ত ডুয়ার্স এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় ৩০টি হাতি, ৭টি বাইসন এবং অন্য বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা ঠেকাতে শুক্রবার উত্তর-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ময়নাগুড়ি স্টেশন থেকে নিউ কোচবিহার স্টেশন পর্যন্ত ডবল লাইন তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের পাওয়ার হাউসে ‘কম্পিউটারাইজ পাওয়ার সেভিং মেশিন’এর উদ্বোধন করেন কেশব চন্দ্র। অনুষ্ঠানে ছিলেন দেবপ্রসাদবাবু। সেখানেই তিনি রেলকর্তার সঙ্গে ডুয়ার্স এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বিপদ এড়াতে ওই প্রস্তাব দেন। রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের এডিআরএম ইন্দ্রজিৎ সিংহ জানান, বিধায়ক ট্রেনের ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যু রুখতে আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে শিলিগুড়ি রুটে কম ট্রেন চালানোর কথা বলেছেন। বিধায়ক বলেন, “এর আগে রেলমন্ত্রী দিনেশ ত্রিবেদীকে একই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। মন্ত্রীকে বলেছি নিউ ময়নাগুড়ি-নিউ কোচবিহার রুটে ডাবল লাইন হলে ডুয়ার্সের জঙ্গলে দুর্ঘটনা কমবে। মন্ত্রী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।”
এ দিকে, আলিপুরদুয়ার শহরের ১ নম্বর অসম গেট লেভেল ক্রসিংয়ে যানজট লেগেই থাকে। সমস্যা সমাধানের জন্য শুক্রবার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে দ্রুত উড়ালপুল তৈরির ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন বিধায়ক। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, উড়ালপুলটি তৈরি করতে প্রায় ৩২ কোটি টাকা খরচ হবে। রেল এবং রাজ্য সরকারের যৌথ ভাবে ওই কাজ করার কথা। রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ ওই কাজের জন্য ইতিমধ্যে পূর্ত দফতরকে ১৮ টাকা দিয়েছে। কিন্তু রেল কোনও উদ্যোগ নেয়নি।
দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে ৭৫টি নদীর উপর রেল সেতু রয়েছে। রেলকর্তাকে বলেছি এলাকার যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নত না হওয়ায় রেল সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করার দাবিও জানানো হয়েছে।” |