জঙ্গি ভয় কাটিয়ে, কোকরাঝাড় রূপনাথ ব্রহ্ম অসামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা একে একে কাজে যোগ দিচ্ছেন। আজ অন্তত ১৫ জন চিকিৎসক কাজে যোগ দিয়েছেন। হাসপাতালের সুপার এ কে দত্ত চিকিৎসকদের ফিরে আসার কথা জানান। কোকরাঝাড়বাসীদের উদ্দেশে সুপারের ঘোষণা, ‘‘হাসপাতালে নির্ভয়ে রোগীদের নিয়ে আসুন।’’ উল্লেখ্য, বড়ো জঙ্গিদের আতঙ্কে ২০০ শয্যার এই হাসপাতালে কর্মরত ৩০ জন চিকিৎসক গণছুটি নিয়ে পালান। এর ফলে হাসপাতালে স্বাভাবিক কাজকর্ম কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
চিকিৎসকদের এমন কাণ্ডে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। হিমন্ত বলেছেন, “নিরাপত্তার অভাব নিয়ে বাড়াবাড়ি করে স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র থেকে ডাক্তারদের পালিয়ে যাওয়াটা অত্যন্ত অন্যায়। আমি সর্ম্পূণ নিরাপত্তা দিয়ে স্নাতক চিকিৎসকদের ওখানে পাঠাব। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে অবস্থা স্বাভাবিক না হলে আমি নিজে ওখানে যাব। যাঁরা কাজে যোগ দেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ‘এসমা’ জারি হতে পারে।”
এনডিএফবি রঞ্জনপন্থীর নাম করে গত শুক্র ও শনিবার, চিকিৎসকদের কাছে হুমকি ফোন এসেছিল। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে মাথাপিছু এক লক্ষ টাকা জঙ্গি তহবিলে দিতে বলা হয়েছিল। হুমকি ফোন আসার জেরে কোকরাঝাড়ের এই হাসপাতালে কর্মরত ৩০ জন চিকিৎসক প্রাণভয়ে গণছুটি নেন। এই অবস্থায় বিভ্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই এই হাসপাতাল ছেড়ে গিয়ে ভর্তি হন অন্যত্র। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এনআরএইচএম ও রাজ্য সরকার জরুরি ভিত্তিতে ৬ জন চিকিৎসককে কোকরাঝাড়ে পাঠান। পাঁচ জন স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকও ভর্তি থাকা রোগীদের সেবায় হাত লাগান। জঙ্গি তোলাবাজির বিরুদ্ধে কোকরাঝাড়ে আবসুর বিরাট প্রতিবাদ মিছিল বেরোয়। চাপে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ সোমবারই কোকরাঝাড়ের এসপিকে বদলি করেন। এলাকার সব অপরাধীকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বড়ো উপজাতি পরিষদের (বিটিসি) প্রতিনিধিরা গত কাল এলাকায় নাগরিক সভার আয়োজন করে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান। পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রী চন্দন ব্রহ্ম জানান, চিকিৎসকদের ব্যক্তিগতভাবেও কাজে যোগ দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় তাঁরা কাজে যোগ দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে গত কাল কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী পি সি হালদারও গুয়াহাটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রঞ্জন দইমারির সঙ্গে দেখা করেন। |