নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি থাকা সত্বেও কী কারণে রাজনৈতিক কাজে স্কুল ঘর ভাড়া দেওয়া হল, তা জানতে চেয়ে শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন দাসকে চিঠি দেবেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। বুধবার সংবাদপত্র দেখে বিষয়টি জানতে পারেন শিলিগুড়ি জেলা স্কুল পরিদর্শক সঞ্জীব কুমার ঘোষ। এদিন তাঁর দফতরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলে এসএফআই। জেলা স্কুল পরিদর্শক বলেন, “স্কুল ঘর ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে আমি পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছি। সংবাদপত্র দেখে তা জানতে পেরেছি। প্রধান শিক্ষক বা স্কুল পরিচালন সমিতি কেউ বিষয়টি আমাকে জানাননি। রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে রাজনৈতিক কাজে স্কুল ভাড়া দেওয়া যাবে না বলে জানানো হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তি স্কুলে পাঠানো হবে। পাশাপাশি স্কুল ঘর ভাড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইব। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হবে।” মঙ্গলবার শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের তিনটি ঘর ভাড়া নিয়ে সাংগঠনিক নির্বাচন করে ছাত্র পরিষদ। সেখানে তাদের রাজ্য সভাপতি নির্বাচন হয়। তাকে ঘিরে স্কুল চত্বরে ব্যপক উত্তেজনা ছিল। পুলিশ পিকেটও বসানো হয়েছিল। বয়েজ হাইস্কুলের পরিচালন সমিতি কংগ্রেস-তৃণমূল প্রভাবিত জাতীয়তাবাদী শিক্ষা মঞ্চের দখলে রয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে নানা চেষ্টা চলছেন। সেই সময় ওই ঘটনায় নানা মহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলির পাশাপাশি বাম পরিচালিত শিক্ষক সংগঠনও বিষয়টির তীব্র সমালোচনা করেছেন। এবিটিএ’র দার্জিলিং জেলা সম্পাদক তমাল চন্দ বলেন, “স্কুল ঘর ভাড়া দেওয়া হয় বলে বাম আমলে কখনও শুনিনি। স্কুল চলাকালীন রাজনৈতিক কাজে বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে স্কুল ঘর ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়। স্কুল ছুটির পর কোনও অনুষ্ঠান হলে সেটা আলাদা বিষয়। আর এখানে স্কুলের সময় একটা নির্বাচন হয়েছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।” জাতীয়তাবাদী শিক্ষা মঞ্চের পক্ষে জয়ন্ত কর বলেন, ‘‘স্কুল চলাকালীন ঘর ভাড়া দেওয়া ঠিক হয়নি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। কী পরিপ্রেক্ষিতে তিনি দিয়েছেন তা জানি না। রাজনৈতিক কাজে স্কুল ঘর ব্যবহার করতে না দেওয়ার সার্কুলার আমরা এখনও পাইনি। সেটা হাতে পেলে নিয়ম মেনে কাজ করা হবে।” ছাত্র সংগঠনগুলির তরফে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানানো হয়েছে। এসএফআইয়ের দার্জিলিং জেলা সভাপতি সৌরভ দাস বলেন, “কী কারণে স্কুল চলাকালীন ক্লাস ঘর ভাড়া দেওয়া হল তা জানতে চাই আমরা। স্কুলে একদিকে ছাত্ররা ছিল, অন্যদিকে নির্বাচন হচ্ছিল। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওই ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। টিএমসিপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশের পরও ওই স্কুল রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে। তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। ওই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করছি আমরি।” ডিএসও’র দার্জিলিং জেলা সম্পাদিকা নমিতা চক্রবর্তী বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। স্কুল চলাকালীন ক্লাস ঘর ভাড়া দেওয়া অন্যায়। এটা মেনে নেওয়া যায় না।” ছাত্র পরিষদের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, সব জানিয়েও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তারা ঘর ভাড়া নিয়েছে। |