কেশরগড় গ্রামের স্কুলছাত্রী খুনের তদন্তে নেমে এক যুবককে গ্রেফতার করল হুড়া থানার পুলিশ। ধৃত শ্যামল সেন ওরফে ছোটকা কেশরগড় গ্রামেরই বাসিন্দা। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সুনীলকুমার চৌধুরী বলেন, “খুন হওয়া স্কুলছাত্রীর মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরেই ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত যুবক পুলিশি জেরায় ওই ছাত্রীকে খুনের কথা কবুল করেছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে পুকুরে স্নান করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী বৈশাখী চন্দ্র (১৯)। বাড়ির লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও তার কোনও হদিস পাননি। পর দিন গ্রামের প্রান্তে পুকুর পাড়ের ঝোপ থেকে ওই স্কুলছাত্রীর গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে বৈশাখীর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। |
আদালতের পথে ধৃত শ্যামল সেন। নিজস্ব চিত্র। |
সেটির ‘কললিস্ট’ পরীক্ষা করে তদন্তকারী অফিসারেরা দেখেন, বিশেষ একটি নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হয়েছে ওই মোবাইল থেকে। তাতেই পুলিশের সন্দেহ হয়। খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, যে নম্বরে ফোন করা হয়েছে, সেটি পেশায় মোবাইল ফোনের দোকানদার শ্যামলের। পুলিশ তাকে আটক করে। পরে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে শ্যামল জানিয়েছে, বৈশাখীর সঙ্গে সম্প্রতি তার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। পরে নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্যের কারণে শ্যামল বৈশাখীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানায়। তাতে বৈশাখী তার উপরে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। ইদানীং বৈশাখী তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিল বলেও জেরায় শ্যামল জানিয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় তারা জেনেছে, চাপে পড়ে শ্যামল ৪ ডিসেম্বর বৈশাখীকে ওই পুকুরপাড়ে ডাকে। তার পরে সুযোগ বুঝে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বৈশাখীর গলার নলি কেটে দিয়ে খুন করে। শ্যামলের বিরুদ্ধে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করেছে। বুধবার তাকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ছ’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবককে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নিহত স্কুলছাত্রীর বাবা ললিতকুমার চন্দ্র এ দিন বলেন, “আমি আর আমার মেয়েকে ফিরে পাব না। কেন তাকে এ ভাবে খুন করল? আমি চাই আইন আইনের পথে চলুক।” তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে শ্যামল কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। |