|
|
|
|
সতর্ক থাকুন, গ্রামে শিবির দমকলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
দিন দশেক আগে শিকারপুরে একটা বড় পাটকাঠির গাদায় আগুল লেগেছিল। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। প্রাথমিক অবস্থায় দমকলকে খবর দিয়েই গ্রামের লোকজন সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে দমকল গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল।
শুধু শিকারপুর বা থানারপাড়া নয়, যে কোন জায়গায় আগুন লাগলে প্রথমে এগিয়ে আসেন স্থানীয় লোকজন। আর এই জায়গাটা ধরেই এগোতে চাইছে দমকলের কর্তারা করিমপুর দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে গ্রামের মানুষের আগুন নেভানোর এই প্রচেষ্টা দমকলের কাজকে অনেকটাই সহজ করে দেয়। করিমপুর দমকল কেন্দ্র থেকে কোন জায়গার গড় দূরত্ব ৪০ থেকে ৫০ কিমি। ফলে কোথাও আগুন লাগলে দমকল সেখানে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় গ্রামবাসীরাই পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। অভিজ্ঞতা এ কথাই বলছে। এ ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষকে যদি একটু সচেতন করা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা দেওয়া যায় তাহলে সহজেই অনেক কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যাবে। বিপদের সময় কি করণীয় এটার থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিপদ যাতে না ঘটে সেই দিকে লক্ষ্য রাখা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সচেনতার অভাবেই বিপদ ঘটে। ফলে মানুষ যদি আগে থেকেই সচেতন হন তাহলে অনেক বিপদই এড়ানো যাবে কিন্তু প্রশ্ন হল সাধারণ মানুষকে কে সচেতন করবে?
করিমপুর দমকলের ওসি সুখেন সরকার বলেন, ‘‘আমরাই মানুষকে সচেতন করব। প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কিছু প্রশিক্ষণও দেব। আমরা বিভিন্ন দফতর ও প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনে সে কথা প্রচারও করছি।” স্কুল, কলেজ, স্থানীয় ক্লাব বা অন্যান্য কোন সংস্থা আমাদের লিখিতভাবে জানালেই আমরা শনি, রবি বা কোন ছুটির দিনে কিংবা টিফিনের সময় সেখানে গিয়ে সচেতনতা শিবির করবেন বলে তাঁরা জানান। গত শনিবার করিমপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে দমকল কর্মীরা দেখেন মিড ডে মিলের রান্না হয় তিনতলায়। প্রতি দিন প্রায় ১২৮৬ জন ছাত্রীর রান্না হয় সেখানে। কিন্তু অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। কখনও কোন দূর্ঘটনা ঘটলে স্কুলের মধ্যে দমকলের গাড়ি ঢোকাও প্রায় অসাধ্য। প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রানী শিকদার বলেন,‘‘ সকলের সাহায্য ও সহযোগিতায় ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে এই স্কুলবাড়ি। খুব ছোট জায়গায় আমাদের স্কুল ফলে জায়গার একটা সমস্যা আছে সেই কারণেই আমরা রান্নাঘরটা উপরে করেছি। আর দমকলের লোকজন যদি স্কুলে এসে আমাদের মেয়েদের সচেতন করেন বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন তাহলে তো ভালই।’’ হোগলবেড়িয়া আদর্শ শিক্ষানিকেতনের প্রধান শিক্ষক বিমলকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন,‘‘ দমকল যদি স্কুলে এসে সচেতনতা শিবির করে, প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন তাহলে তো আমাদেরই লাভ। যাঁরা স্কুলে মিড ডে মিল রান্না করেন তাঁরাও এই ব্যাপারে অনেক সচেতন হবেন।’’ করিমপুর দমকলের ওসি সুখেন সরকার বলেন,‘‘ পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। কিন্তু তাই বলে শুধু নেই নেই বলে হা হুতাশ করলে হবে না। সকলেরই সামর্থ্য অনুযায়ী কাজটা করে যেতে হবে। আমরাও যেমন কিছু উদ্যোগ নিচ্ছি, তেমনি অন্যান্যদেরও উদ্যোগ নিতে হবে তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে। আমরির ঘটনার পর কিছুটা হলেও মানুষের সচেতনতা চোখে পড়ছে। তবে তা কত দিনের জন্য?” উত্তরও নিজেই দিচ্ছেন সুখেনবাবু, “জানি না।” |
|
|
|
|
|