|
|
|
|
কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা |
কর্মী-সঙ্কটে এমকেডিএ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কর্মী-সঙ্কটে ব্যাহত হতে পারে স্বাভাবিক কাজকর্ম। এমনই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদে (এমকেডিএ-তে)। পর্ষদের তিন কর্মী চাকরি ছাড়তে চলেছেন। তাঁদের মধ্যে ২ জন অন্যত্র স্থায়ী চাকরি পেয়েছেন। অন্য ১ জন শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বেচ্ছায় কাজ থেকে সরে যাবেন বলে পর্ষদ সূত্রে খবর।
এই অবস্থায় পর্ষদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষও। পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “শূন্যপদে দ্রুত কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করা হবে। বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ৩ জন কর্মী কাজ ছাড়ার ফলে সমস্যা হবেই। তবে, স্বাভাবিক কাজকর্ম যাতে ব্যাহত না-হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে।”
মেদিনীপুর-খড়গপুর উন্নয়ন পর্ষদে কর্মীর সংখ্যা সব মিলিয়ে ৮ জন। তা-ও চুক্তিভিত্তিক। স্থায়ী পদ না-থাকায় প্রায়ই সমস্যা হয়। পর্ষদের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পদে কেউ নেই। জেলা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকই এখানে সময় দেন। কাজকর্ম দেখভাল করেন। পর্ষদ সূত্রে খবর, এত দিন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে কাজ করছিলেন শান্তনু মাইতি। কিন্তু, রেলে স্থায়ী চাকরি পাওয়ার ফলে আর এখানে কাজ করবেন না তিনি। চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে ইতিমধ্যেই চাকরি ছাড়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। সাব-অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে কাজ করছিলেন অরিজিৎ দোলুই। অরিজিৎবাবুও স্থায়ী সরকারি চাকরি পেয়েছেন। অন্য দিকে, পর্ষদের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জয়ন্ত কুলভিও শারীরিক অসুস্থতার কারণে কাজ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে এত দিনেও পর্ষদে স্থায়ী পদ তৈরি হল না কেন, সে প্রশ্ন উঠছে।
দুই শহর ও সংলগ্ন এলাকায় উন্নয়নের কাজে গতি আনতেই মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করা হয়। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০০৩ সালে গড়ে ওঠে পর্ষদ। স্থায়ী ভবন নেই। জেলা পরিষদ চত্বরে গড়ে ওঠা শহিদ ক্ষুদিরাম পরিকল্পনা ভবনেই পর্ষদের দফতর রয়েছে। দুই পুরসভা এলাকা ছাড়া মেদিনীপুর সদর, শালবনি, খড়গপুর-১ ও ২---এই চারটি ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে উন্নয়ন পর্ষদের প্ল্যানিং এরিয়ার আওতায়। ২০০৪ সাল থেকেই পুরোদমে কাজ শুরু হয়। শুরুতে পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন সাংসদ পুলিনবিহারী বাস্কে। রাজ্যে পালাবদলের পর এই পদে বসেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেনবাবু। গঠিত হয় নতুন কমিটি।
আয় বাড়াতে এ বার নিজস্ব সম্পদ তৈরির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি পর্ষদ কর্তৃপক্ষের। ইতিমধ্যে রানি শিরোমণির স্মৃতি বিজড়িত কর্ণগড়কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। দুই শহরে চারটি করে মোট আটটি শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮ লক্ষ টাকা। পর্ষদের এক আধিকারিকের কথায়, “শহর ও তার আশপাশের এলাকায় উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রাখতে গেলে আরও অর্থ প্রয়োজন। তাই নিজস্ব সম্পদ তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। সম্পদ বাড়লে স্বাভাবিক ভাবেই পর্ষদের আয় বাড়বে। সেই অর্থে উন্নয়ন আরও এগোবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে কাজ করতেও আমাদের অসুবিধা নেই।” পর্ষদের নতুন কমিটির প্রথম বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। সেই মতো বেশ কয়েকটি রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। কিন্তু, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার,
সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের পদ শূন্য থাকলে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হবে বলেই আশঙ্কা করছেন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ।
|
|
|
|
|
|