|
|
|
|
উমাপতিবাড়েও ধৃত ৩ |
নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে গ্রেফতার খেজুরির ডিওয়াইএফ কর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক ও এগরা |
২০০৭-এর ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মিছিলে হামলা এবং ভূমি-কমিটির বেশ কয়েক জনকে ‘গুমখুনে’ জড়িত সন্দেহে বুধবার খেজুরির কলাগেছিয়া থেকে মতিউর রহমান নামে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের এক কর্মীকে গ্রেফতার করল সিআইডি। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ-কাণ্ডে তদন্ত শুরু করে এই নিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। এর আগে খেজুরির নিজ-কসবার প্রাক্তন সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য অজিত বর এবং কামারদার একটি ক্লাবের অ্যাম্বুল্যান্সের চালক শক্তি দলপতিকে ধরেছিল সিআইডি। ওই দু’জনই আপাতত জেলে বন্দি। বুধবার বিকেলে ধৃত মতিউরকে আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হবে বলে সিআইডি সূত্রের খবর। ধৃত ডিওয়াইএফ কর্মী নন্দীগ্রামে সে দিন ভূমি-কমিটির মিছিলের উপর হামলায় অন্যতম মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে দাবি সিআইডি অফিসারদের। এর আগে ধৃত অজিত বর এবং শক্তি দলপতি হামলায় নিহতদের দেহ গায়েবে ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে দাবি সিআইডি-র। এই মামলার তদন্তে বুধবার দিনভরই সিআইডি-দল খেজুরির বিভিন্ন এলাকায় ঘোরে।
এ দিকে, কাঁথির উমাপতিবাড়ে ‘অপহৃত’ এক সিপিএম নেতার খোঁজে গিয়ে দুই সিপিএম নেতার বাড়ি থেকে তিনটি রাইফেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‘অপহৃত’কে উদ্ধারের পর অস্ত্র লুকিয়ে রাখার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধরা হয়েছে আরও ২ সিপিএম কর্মীকে।
মঙ্গলবার রাতে সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রশান্ত পাত্র অভিযোগ করেন, উমাপতিবাড় গ্রামের মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে একটি বৈঠক চলাকালীন হামলা চালিয়ে তৃণমূলের লোকজন বেশ কয়েক জন সিপিএম নেতা-কর্মীকে মারধর করে। মণিশঙ্কর জানা নামে দলের নমালডিহা লোকাল কমিটির সদস্য ও আরও দুই দলীয় কর্মীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও প্রশান্তবাবু অভিযোগ করেছিলেন। তল্লাশি চালিয়ে গভীর রাতে গ্রামের একটি ফাঁকা জায়গা থেকে মণিশঙ্করবাবু, তাঁর ভাইপো দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সুবিমল, শিবশঙ্কর জানা ও গণেশ ধাড়া নামে দুই সিপিএম কর্মীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
তাঁদের নিয়ে পুলিশ গ্রামে ফিরতেই তৃণমূলের সমর্থকেরা অভিযোগ করেন, এলাকার সিপিএম নেতা-কর্মীদের বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে এবং মণিশঙ্করবাবুরা তা জানেন। তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। শেষে সিপিএম নেতা স্বপন গিরির বাড়ি থেকে একটি এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য সুলেখা ভুঁইয়ার বাড়ি থেকে দু’টি রাইফেল উদ্ধার হয়। স্বপনবাবু বা সুলেখাদেবী অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না। আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখায় জড়িত সন্দেহে মণিশঙ্কর, শিবশঙ্কর ও গণেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার ধৃতদের কাঁথি এসিজেএম আদালতে তোলা হলে ৩ দিন জেল-হেফাজতে রেখে তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারক। আগামী ১৭ ডিসেম্বর ফের মামলার শুনানি হবে।
প্রশান্তবাবুর অভিযোগ, “শুনিয়া, উমাপতিবাড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। ওদের দলে যোগ না দেওয়ায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। তৃণমূলকর্মীরা নিজেদের অকেজো অস্ত্রগুলি সিপিএম নেতা-কর্মীদের বাড়িতে রেখে পরে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক করছে।” গোটা ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে কাঁথি শহরে মিছিলও করে সিপিএম। পরে স্মারকলিপি দেওয়া হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (গ্রামীণ) কাছে। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেনের অবশ্য দাবি, “পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতেই মণিশঙ্করবাবুরা গোপন অস্ত্রের হদিস দিয়েছেন।” অস্ত্র-উদ্ধারে আরও উদ্যোগী হওয়ার জন্যও পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা। অন্যথায় ‘গ্রামবাসীরাই সিপিএম নেতাদের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করবেন’ বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
|
|
|
|
|
|