|
|
|
|
বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে দলেই প্রশ্নের মুখে প্রকাশ কারাট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সরকার-বিরোধিতার সুর চড়াতে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কি মাত্রা ছাড়াচ্ছে? আগামী বছরের পার্টি কংগ্রেসে কী রাজনৈতিক কৌশল গৃহীত হবে, তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এই প্রশ্ন উঠেছে সিপিএমের অন্দরমহলে।
সংসদের চলতি অধিবেশনে মনমোহন-সরকারের বিরুদ্ধে বাম ও বিজেপির ‘ঐক্য’-ই এই প্রশ্নের উৎস। গত রবিবার দিল্লির যন্তর মন্তরে অণ্ণা হজারের মঞ্চেও সেই ঐক্য দেখা গিয়েছে। সেখানে বৃন্দা কারাত ও অরুণ জেটলি একই সঙ্গে অণ্ণার মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন। দলের অনেক নেতাই মনে করছেন, এর ফলে সিপিএম তথা বামেরা কংগ্রেসের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিজেপির হাত ধরছে বলে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সিপিএমের সংসদীয় দলনেতা সীতারাম ইয়েচুরি রবিবার দিল্লিতে ছিলেন না। কমিউনিস্ট ও শ্রমিক দলগুলির আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এথেন্সে গিয়েছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, সেখান থেকেই ইয়েচুরি ফোন করে প্রকাশ কারাটের কাছে জানতে চান, সিপিএমের হয়ে কেউ অণ্ণার মঞ্চে যোগ দিচ্ছে কি না। প্রকাশ জানান, সিপিআইয়ের এ বি বর্ধন যাচ্ছেন। সিপিএমের তরফেও বৃন্দা যোগ দেবেন।
ইয়েচুরির মতো নেতারা মনে করছেন, সব কিছু ভুলে কংগ্রেস-বিরোধিতা করতে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে একই মঞ্চে চলে আসছে সিপিএম। মূল্যবৃদ্ধি, কালো টাকা নিয়ে সংসদে কক্ষ সমন্বয় তৈরি করতে গিয়েও একই ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে আর্থিক নীতির বিশেষ ফারাক না থাকায় বিজেপি যেমন বিমা বিলে সরকারকে সমর্থন করেছে, তেমনই আগামী দিনে পেনশন বিলেও সরকারের পাশে দাঁড়াতে পারে। উদারিকরণের এই সব কর্মসূচি এনডিএ-র আমলেই তৈরি হয়েছিল। কংগ্রেস না বিজেপি, কে বড় শত্রু, সেই পুরনো সংশয় ফের উপস্থিত হয়েছে পার্টির সামনে।
কারাট-শিবির কিন্তু বলছে, কোনও সংশয়ের জায়গা নেই। মনমোহন-সরকার যে ভাবে লাগামছাড়া আর্থিক উদারিকরণের পথে হাঁটছে, তাতে কংগ্রেসকে সমর্থন করার প্রশ্ন নেই। একই ভাবে বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে অর্ন্তদ্বন্দ্বের কারণে আরএসএস পুরোপুরি দলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। তাই নির্দিষ্ট বিষয়ে বিজেপির সঙ্গে ঐকমত্য বা সংসদে কক্ষ সমন্বয় হলেও সম্পর্ক সেখানেই ‘সীমাবদ্ধ’ থাকবে। অণ্ণার মঞ্চে বৃন্দার যোগদান নিয়ে কারাট-শিবিরের বক্তব্য, সেখানে লোকপাল নিয়ে দলের অবস্থান জানিয়েছেন বৃন্দা। ইয়েচুরি বিদেশে থাকবেন বলে বৃন্দা সেখানে যাবেন, তিন দিন আগেই এই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল। অণ্ণা বা বিজেপি, কারওকেই সমর্থন জানানো হয়নি।
আজ দু’দিনের পলিটব্যুরো বৈঠকের শেষে সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্য বলেন, “কংগ্রেস বা বিজেপির উপর নির্ভরশীল না থেকে পার্টির নিজস্ব শক্তিবৃদ্ধি করাটাই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চাবিকাঠি বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত বছর অগস্টে বিজয়ওয়াড়ায় দলের বর্ধিত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেই সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।” কারাট-শিবিরের ব্যাখ্যা, ২০০৮ সালে কোয়ম্বত্তূরে পার্টি কংগ্রেসের দলিলে কংগ্রেসকে সমর্থন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তখনও দলে ধারণা ছিল, পরমাণু চুক্তি আটকানো সম্ভব হবে। কিন্তু তার তিন মাসের মাথায় সমর্থন প্রত্যাহার করতে হয়। |
|
|
|
|
|