সেক্টর ফাইভে অগ্নি-সুরক্ষা
দুর্ঘটনা থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে পরিদর্শনে কর্তারা
রকারি ভাবে পাঁচ নম্বর সেক্টরের বহুতলগুলিতে শেষ বার অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হয়েছিল গত এপ্রিল মাসে। ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের পরে ফের শুরু হল পর্যবেক্ষণ। শিল্পতালুকের বেশির ভাগ বহুতলের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হয় বছরে এক বার করে। এত দিনে সে ব্যবস্থা পরিবর্তনে উদ্যোগী হচ্ছেন নবদিগন্ত শিল্পতালুক-কর্তৃপক্ষ।
শিল্পতালুকে এ ভাবে পরিদর্শনের কাজ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। পুলিশ এবং দমকলকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার ‘টেকনোপলিস’-এ যান নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে ওই বহুতলের ব্যবস্থায় কোনও ত্রুটি পাওয়া যায়নি বলেই জানান পরিদর্শকেরা।
তবে দু’দিনে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি জায়গাতেই যেতে পেরেছেন সরকারি আধিকারিকেরা। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শিল্পতালুকের প্রতিটি বহুতল কিছু দিন অন্তর পর্যবেক্ষণ করার মতো পরিকাঠামো দমকল, পুলিশ কিংবা নবদিগন্তের নেই। ওই সংস্থার চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য আশ্বাস, “শিল্পতালুকে দুশোটি বাড়ি রয়েছে। সব ক’টি জায়গাতেই পর্যবেক্ষণ হবে।”
অনেক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থারই অভিযোগ, বছরে এক বার অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনের সময়েই শুধু দেখা মেলে নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষের। আগুন নেভানো কিংবা দুর্ঘটনার সময়ে কর্মীদের বহুতল থেকে উদ্ধারের মহড়া ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, তার ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য কেউ থাকেন না।
অভিযোগ যে ভিত্তিহীন নয়, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষও। তবে এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাঁরা। নবদিগন্তের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার বদ্রীনারায়ণ কর বলেন, “এ বার থেকে আচমকাই বিভিন্ন বহুতলে হানা দেওয়া হবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পরীক্ষা করার জন্য। এত দিন সব কিছু বছরে এক বার খতিয়ে দেখা হত।”
টেকনোপলিস ভবনে নবদিগন্ত-কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন। বুধবার। ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ।
সেক্টর ফাইভের কর্মীরাও প্রশ্ন তুলেছেন অগ্নিবিধি পরীক্ষার সরকারি ব্যবস্থাপনা নিয়ে। ন্যাসকম-এর পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সুপর্ণ মৈত্র বলেন, “এখানে বাড়ি চেনাই মুশকিল। উপরন্তু যত্রতত্র গাড়ির পার্কিং। ফলে আগুন লাগলে দমকলকর্মীদের পক্ষে সেই বাড়ি চিনে যানজট এড়িয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে সময় লেগে যাবে।”
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত লোকজনের অভিযোগ, শিল্পতালুকে রাস্তা পর্যাপ্ত নয়। তার মধ্যেও গড়ে উঠেছে একের পর এক বহুতল। বর্তমানে সেখানে বাড়ির সংখ্যা প্রায় ২০০। ঢাকুরিয়ার আমরি-র মতো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বহুতলগুলি কেন্দ্রীয় ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। অনেক জায়গাতেই স্বাভাবিক বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই। জানলাগুলি খোলা যায় না। অনেক বহুতলেই বেসমেন্ট কার পার্কিংয়ের বদলে অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। দমকলের জন্য আলাদা জলাধারও নেই। যে দমকল কেন্দ্রটি আছে, সেখানেও কর্মী-সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। এমনকী, আগুন লাগলে অত্যাধুনিক স্কাই ল্যাডার কাজে লাগানোর মতো জায়গাও ‘পার্কিং লট’ তৈরি হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে থাকে না।
রাজ্যের দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান অবশ্য মনে করেন শিল্পতালুকের অগ্নি-নিরাপত্তার পরিকাঠামো উন্নতির জন্য সময় লাগবে। তিনি বলেন, ‘‘ওখানে রাতারাতি কিছু বদলে ফেলা সম্ভব নয়। ৩৪ বছরে সে ভাবে পরিকাঠামোই তৈরি করা হয়নি। পাঁচ নম্বর সেক্টরে সমীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পরে সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা হবে।” এ দিকে, আবাসিকদের নিরাপত্তার খাতিরে সল্টলেকের বিভিন্ন স্কুল এবং বহুতল বাড়িতে ফায়ার অ্যালার্ম-সহ অন্যান্য অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা আবশ্যিক করতে চলেছেন বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে খুব শীঘ্রই নির্দেশিকা জারি হবে। পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “আবাসিক এবং অফিস, সব ধরনের বহুতলেই ওই ব্যবস্থা রাখতে হবে। সল্টলেকের বিভিন্ন বাড়ির নকশা খতিয়ে দেখার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও বেআইনি কিছু হয়ে থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.