ইঞ্জিন ৩, নেই হাইড্রলিক সিঁড়ি
বাড়ছে শহর, দমকল সেই ঠুঁটো জগন্নাথ
ঘিঞ্জি গলি। দু’পাশে সার বেধে বাড়ি আর দোকান। তারের জাল ঢেকে ফেলেছে গোটা আকাশ।
আর এ সবের মধ্যেই রোজ বাড়ছে আসানসোল। ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে প্রচুর বহুতল, শপিং মল। নির্মাণের বিভিন্ন কাজ চলছে এখনও। সরকারি-বেসরকারি নানা বিনিয়োগ আসছে। মাস তিনেক আগেই এই শহরকে কমিশনারেটের আওতায় এনেছে রাজ্য সরকার। ঠিক এই অবস্থায় আমরি-কাণ্ড ঘুম কেড়ে নিয়েছে দমকল-কর্তাদের। কারণ, হঠাৎ বড়সড় আগুন লাগলে তা সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো দমকলের আছে কি না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই।
আগুনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াই করার গুরুদায়িত্ব যাঁদের কাঁধে সেই দমকল অফিসারদের কথাতেই ধরা পড়েছে অপর্যাপ্ত পরিকাঠামোর ছবি।
বিশাল এলাকা সামলাতে দমকলের ভরসা মাত্র তিনটি ইঞ্জিন। নেই বহুতলে আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় উঁচু সিঁড়ি। বড় জার তিন তলা পর্যন্ত পাইপ নিয়ে যাওয়ার সিঁড়ি আছে তাঁদের। অথচ, আসানসোলের অধিকাংশ বহুতলই ছ’তলা। রয়েছে বেশ কিছু ১২ তল বিশিষ্ট বহুতলও। তার উপরে কুমারপুরের কাছে তৈরি হচ্ছে ১৫ তল বিশিষ্ট প্রায় কয়েকশো বহুতল।
অথচ কোনও হাইড্রলিক সিঁড়িই নেই দমকলের।
আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্যে ক্ষমতার হাত-বদল হয়েছে। এ বার অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপই করা হবে।
ঘিঞ্জি গলিতে বহুতল আবাসন। আসানসোল বাজারে ছবিটি তুলেছেন শৈলেন সরকার।
শিল্প তালুকের কোন কোন এলাকা আসানসোল দমকলের আওতায়?
দমকল ওসি সেলিম জাভেদ জানান, আসানসোল পুরসভা অঞ্চল ছাড়াও হিরাপুর থানা এলাকা, কুলটি পুর এলাকা, বারাবনি ও সালানপুর ব্লক, চিত্তরঞ্জন এবং জামুড়িয়ার একটি অংশ তাঁদের দায়িত্বে। ভোটার তালিকা অনুযায়ী এই এলাকাগুলির জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ। রয়েছে আসানসোল বাজার। এছাড়াও কুলটি, বরাকর, বার্নপুর, বারাবনি, সালানপুর, রূপনারায়ণপুর ও চিত্তরঞ্জনের একটি বড় বাজার-সহ একাধিক বাজার রয়েছে। সব মিলিয়ে আসানসোলকে কেন্দ্র করে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার ব্যাস এলাকা জুড়ে আগুন নেভানোর দায়িত্বে তাঁরা।
কিন্তু যেটুকু পরিকাঠামো তাঁদের আছে তা দিয়ে এই বিস্তীর্ণ এলাকা সামাল দেওয়া একেবারেই অসম্ভব। তবু কার্যত জীবন হাতে নিয়েই কাজ তাঁদের।
শুধু আসানসোলেই রয়েছে প্রায় ২ হাজার বহুতল। আশপাশের এলাকায় আরও কয়েকশো বহুতল। এক ডজনের বেশি শপিং মলও বহুতল।
আর এই অবস্থায় এত দিন কোনও হাইড্রলিক সিঁড়িই কেনা হয়নি? মেয়র তাপসবাবুর কথায়, “দমকলের পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী এবং পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। একটি হাইড্রলিক সিঁড়ির দাম প্রায় ৫ কোটি টাকা। তাড়াহুড়ো করে তো কিছু করা যাবে না। নিয়ম নীতি মেনেই আমরা এগোচ্ছি।”
ততদিন পর্যন্ত কি অপেক্ষায় থাকবে আগুন-ও, প্রশ্ন নাগরিকদের।

(চলবে)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.