পণ্য রফতানির ছাড়পত্র মালদহ শুল্ক দফতরে সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের রফতানিকারিরা। সোমবার থেকে হিলি আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে লাগাতার বহির্বাণিজ্য বন্ধের ডাক দিয়েছে হিলি এক্সপোটার্স অ্যাণ্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সম্পাদক অশোক মন্ডলের অভিযোগ, “রফতানি বাণিজ্যের শুরু থেকেই হিলি শুল্ক দফতর বাংলাদেশে রফতানি পণ্যের ছাড়পত্র দিয়ে আসছে। হঠাৎ করে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরে মালদহ শুল্ক দফতর থেকে ওই ছাড়পত্র নেওয়ার নির্দেশের প্রতিবাদে আমরা ধর্মঘটে নামতে বাধ্য হয়েছি।” হিলি শুল্ক দফতরের আধিকারিক দেবব্রত সরকার বলেন, “মালদহের বিভাগীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নির্দেশে রফতানি পণ্যের ছাড়পত্র এখন থেকে ব্যবসায়ীদের মালদহ থেকে নিতে হবে। হিলি শুল্কদফতর থেকে দেওয়া যাবে না।” পুনরায় হিলি শুল্ক দফতর থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য রফতানিকারিদের বহির্বাণিজ্য বন্ধের জেরে আমদানি-বাণিজ্যের পাশাপাশি সরকারি রাজস্ব আয়েও ধাক্কা খেয়েছে। |
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দূর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “সমস্যার কথা কেউ জানাননি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” এ রাজ্যে বেনাপোলের পরই হিলি সীমান্ত দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে রোজ গড়ে প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার (২ কোটি টাকার উপর) বৈদেশিক মুদ্রা কেন্দ্রীয় সরকার অর্জন করে। শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বহির্বাণিজ্য বন্ধের ফলে বিপাকে পড়েছেন বাইরের জেলার রফতানিকারি-সহ লরির চালকেরা। আন্দোলনকারী ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, “হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে মূলত ফল, পেঁয়াজ, ভুট্টার মত কাঁচামাল রফতানি হয়। নাসিক-সহ ভিন রাজ্য থেকে কাঁচামাল আসে হিলিতে এরপর পণ্য ওজন করে সেই কাগজপত্র নিয়ে মালদহ শুল্কদফতরে গিয়ে ছাড়পত্র পেতে সময় ও হয়রানির পাশাপাশি কাঁচামাল পচে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।” এক্সপোটার্স সমিতির দাবি, প্রয়োজনে হিলিতে শুল্ক দফতরের অতিরিক্ত অফিস খুলে ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোকবাবুর অভিযোগ, “গত ১৬ নভেম্বর মালদহের বিভাগীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের দফতর থেকে বাংলাদেশে পণ্য রফতানির ছাড়পত্র হিলির বদলে মালদহের দফতর থেকে নেওয়ার নির্দেশ আসে। আমরা শুল্ক বিভাগের কলকাতা অফিসে যোগাযোগ করা হলে ওই নির্দেশ কার্যকর হবে না বলে জানানো হয়। অথচ গত ৭ ডিসেম্বর মালদহের দফতর থেকে ফের ওই নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সুবিধা না-দেখে রফতানি বাণিজ্যে জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে।” শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, গত ৯ মাসে হিলি চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় ৪৩১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার পণ্য বাংলাদেশে রফতানি এবং ৩১ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার পন্য আমদানি হয়েছে। |