করিমপুর বাজার কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ
ব্যবহারের পর মাঠ পরিষ্কার না করলে জরিমানা
ব্যবহার করার পর মাঠ পরিষ্কার? উঁহু, কেউ কখনও করেছেন বলে জানে না করিমপুর। তবে নোটিস ঝুলিয়ে, সীমান্ত শহরের এক মাত্র ময়দান, রেগুলেটেড মার্কেট গ্রাউন্ড এ বার থেকে ব্যবহারের পর সাফ সুতরো না করে দিলে জরিমানা ধার্য করে নজির গড়তে চলেছে।
পড়ে থাকে প্লাস্টিকের প্লেট, নোংরা, আবর্জনা ভিড়ে হতশ্রী সেই মাঠের চেহারা ফেরাতে শেষ পর্যন্ত ওই বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দিয়েছে তারা। সদ্য টাঙানো সেই নোটিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে, মাঠ ব্যবহার করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। তারপর মাঠ ব্যবহারের পর মাঠ সাফাই করে দিতে হবে। অন্যথায় মাঠ সাফাইয়ের খরচ গুনতে হবে ওই সংস্থা বা ভাড়া নেওয়া সংগঠনকে। রেগুলেটেড মার্কেট কর্তৃপক্ষের দাবি, এই নোটিসের পর পরিস্থিতি পাল্টাবে। মার্কেটের সম্পাদক দেবাশীষ খান বলেন,‘‘ মার্কেটের ফাঁকা জায়গা বা মাঠ কেউ ব্যবহার করতে চাইলে আমরা অনুমতি দিয়ে দিই। কিন্তু এটা খুব লজ্জাজনক ঘটনা যে মাঠ ব্যবহারের পর মাঠটা পরিস্কার করার কথা প্রায় সকলেই ভুলে যান। তাই আমরা এই বিষয়ে একটা নোটিশ দিতে বাধ্য হয়েছি।’’
সভা-সমাবেশ-অনুষ্ঠানের পরে চেনা চেহারায় করিমপুর বাজার ময়দান। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে করিমপুর রেগুলেটেড মার্কেটের মাঠে প্রায় সারা বছরই চলে ক্রিকেট ও ফুটবল। প্রাতঃভ্রমণকারীরাও হাটতে আসেন। অথচ প্রতি বছরই শীত পড়তেই এই মাঠে ভিড় লেগে যায় শীতকালীন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে পিকনিক, যাত্রা অনুষ্ঠান থেকে মেলা। কিন্তু সব মিটে যাওয়ার পরে সেই মাঠে দিন কয়েক পা দেওয়াই দায় হয়ে দাঁড়ায়। গত ৩ ডিসেম্বর ওই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে ছিল শীতকালীন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। করিমপুর চক্রের প্রায় ৮৫টি প্রাথমিক স্কুল ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ছেলেমেয়েরা অংশ নিয়েছিল ওই প্রতিযোগিতায়। ছিল খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও। কিন্তু মাঠ আর সাফাই হয়নি। কেন? ওই ক্রীড়া কমিটির সভাপতি তথা করিমপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক গৌতম হালদার বলেন,‘‘ মাঠ তো পরিস্কার করে দেওয়ার কথা ছিল। কেন করা হয়নিনে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
করিমপুর আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক দীপঙ্কর সাহা বলেন,‘‘ ব্যবহারের পর মাঠ নোংরা করে রাখাটাই এখানকার রেওয়াজ! আর পরের দিন মাঠে গিয়ে তার ফল ভুগতে হয় খেলোয়াড়দের। শুধু রেগুলেটেড মার্কেটে নয় এলাকার প্রায় সব মাঠেই এমনটা ঘটে। শীতকালে সেই মাত্রাটা আরও বেড়ে যায়।’’ দীপঙ্করবাবুর কথায়, ‘‘এই এলাকায় যেকটি খেলার মাঠ আছে সেগুলো বেশিরভাগই কোন স্কুল কিংবা ক্লাবের মাঠ শীত পড়তেই সেই মাঠগুলিতে শুরু হয়ে যায় নানা ধরণের অনুষ্ঠান। এটাও ঠিক যে সেই মাঠগুলি ছাড়া এই অনুষ্ঠানগুলো সম্ভব নয়। কিন্তু অনুষ্ঠানের শেষে মাঠটা পরিস্কার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়াটাও কিন্তু উদ্যোক্তাদের একটা দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। সেটাই সবাই ভুলে যান।’’ তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন,‘‘ব্যবহারের পর মাঠ পরিস্কার করে দেওয়ায়াটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এই স্বাভাবিক কাজটা করতেই অনেকে ভুলে যান। এ ক্ষেত্রে রেগুলেটেড মার্কেট নোটিশ দিয়ে ভালই করেছে। এরকম কোন নিয়ম চালু থাকলে অন্তত দায় এড়াতে পারবে না কেউ।”
ব্রিগেডে সভা-সমাবেশের পরে মাঠ পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়ার বিধি থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলি সে পথ মাড়াত না। তবে সম্প্রতি মতি ফিরেছে রাজনৈতিক সংগঠনগুলির। করিমপুর তাকেই অনুসরণ করে কি না তাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.