এমনিতে ধর্মশিক্ষা দেওয়ার স্কুল। কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে নেমে বেসমেন্টের দরজাটা খুলতেই চোখে পড়ল একটা দমবন্ধ করা দৃশ্য। শিকলের জালের ভিতর থেকে চকচক করছে বেশ কয়েক জোড়া চোখ! |
করাচি শহরের সোহরাব গোথ এলাকার একটি মসজিদ ঘেঁষা স্কুলের
বেসমেন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার। ছবি: এ এফ পি |
কয়েক মিনিট পরে সেখান থেকে একে একে বেরিয়ে এল পঞ্চাশ জন পড়ুয়া। প্রত্যেকেরই বয়স ৮ থেকে ১৮-র মধ্যে। করাচি শহরের সোহরাব গোথ এলাকার একটি মসজিদ ঘেঁষা স্কুলের বেসমেন্টে অন্ধকার ঘরে সারা গায়ে শিকল পরিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল ওদের। সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ যখন তাদের বার করে আনছে, তখন অনেকেই অসুস্থ। পাকিস্তানের পুলিশের দাবি, ওই পড়ুয়াদের জোর করে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিতে তালিবানের মদতে এমন ‘প্রশিক্ষণের’ ব্যবস্থা করেছিল মৌলবাদী ‘শিক্ষকেরা’। পাক পুলিশ সূত্রে খবর, সোহরাব গোথ এলাকাটি এমনিতেই জঙ্গি প্রভাবিত। সম্প্রতি তারা জানতে পারে, সেখানকার একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিছু পড়ুয়াকে আটকে রাখা রয়েছে। এর পরেই সোমবার সিন্ধু প্রদেশের ইনস্পেক্টর জেনারেলের নির্দেশে সেখানে অভিযান চালানো হয়। স্কুলের প্রধান কাদি উসমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে জেরা করে এই ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজ চলছে। পুলিশের দাবি, এই ঘটনার পিছনে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘তেহরিক-ই-তালিবান’-এর মদত থাকতে পারে।
উদ্ধার হওয়া এক পড়ুয়ার কথায়, “আমাদের শিকলে বেঁধে রাখা হত। কথা না-শুনলে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারধর করত। বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে লড়াই করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” প্রাথমিক তদন্তে পাক পুলিশেরও একই দাবি। তবে পুলিশ প্রশাসনেরই একাংশ বলছে, পড়ুয়ারা মাদকাসক্ত। তাদের সুস্থ করতেই এমন ‘শাস্তি’ দিচ্ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ! ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রেহমান মালিক। |