ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্বেই প্রকাশ্যে চলে এল কালনা কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। মঙ্গলবার মোট ৩০টি আসনের জন্য ৫৪টি মনোনয়নপত্র জমা দেন টিএমসিপি প্রার্থীরা। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রয়েছে।
সোমবার মনোনয়ন তোলার পর্ব মিটতেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, এ বার এসএফআই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। তাদের অভিযোগ, ভোটে লড়ার মতো ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ’ কলেজে নেই। টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদের পাল্টা বক্তব্য, এ সব ছেঁদো যুক্তি। লড়লে গো-হারান হারবে বুঝেই বামেরা আগেভাগে সরে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে টিএমসিপি-ছাত্র পরিষদ সার্বিক জোট হলে ভোটাভুটির প্রয়োজনই থাকত না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছাত্র সংসদের দখল পেত তারা। মনোনয়ন তোলার পরে দুই সংগঠনের নেতাদের বোঝাপড়া হয়ে যাওয়ায় জোট হওয়া প্রায় নিশ্চিত। ফলে, এ দিন সকাল পর্যন্ত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের কথাই ভাবছিল জোট-শিবির।
কিন্তু বেলা ১০টায় কলেজ খুলতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। টিএমসিপি-র দু’টি গোষ্ঠী নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশকে ফোন করতে থাকে। দু’পক্ষকেই পৃথক নিরাপত্তা দিয়ে কলেজে পৌঁছে দেয় পুলিশ। |
টিএমসিপি-র কালনা মহকুমা সভাপতি সন্দীপ বসু বলেন, “জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা ৩০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছি।”
অপর গোষ্ঠী প্রার্থী দিয়েছে ২৪টি আসনে। কলেজ সূত্রের খবর, সমরজিৎ হালদার নামে এক ছাত্রনেতার মদতেই এই পৃথক মনোনয়ন জমা দেওয়া। সন্দীপের প্রশ্ন, “সংগঠনের বাইরে অন্য কেউ যদি কিছু করে, তার দায় কেন আমরা নেব?” সমরজিৎ পাল্টা বলেন, “ওদের তালিকায় থাকা কয়েকটি নাম নিয়ে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। তবে আলোচনা চলছে। টিএমসিপি-র নামে শেষ পর্যন্ত ৩০টি মনোনয়নই থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।”
টিএমসিপি-র অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা মহকুমা কমিটির আহ্বায়ক পলাশ মণ্ডল জানান, মনোনয়ন তোলার আগে জেলা সভাপতি অশোক রুদ্র প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ছয় সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। তাতে ছিলেন পলাশও। সে ক্ষেত্রে, কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত ২৪টি মনোনয়ন তোলা হল কেন, তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি। পলাশ বলেন, “এ নিয়ে সংগঠনের বৈঠকে আলোচনা হবে।”
এই ডামাডোলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও। তবে কালনা শহর কংগ্রেসের নেতা তথা উপ-পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “টিএমসিপি-র দু’টি গোষ্ঠী প্রার্থী দিয়েছে বলে শুনেছি। তবে ছাত্র পরিষদ ‘আসল’ টিএমসিপি-র সঙ্গেই জোট গড়তে আগ্রহী।” |