আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল
ওয়ার্ডের মধ্যেই হিটার জ্বেলে রান্না
গুন নেভানোর ব্যবস্থা আছে খাতা-কলমেই!
সোমবার সরকারি আধিকারিকেরা আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখলেন এমনটাই। প্রথমে তো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না অগ্নি নির্বাপণের জন্য প্রয়োজনীয় সিলিন্ডারগুলি। আধ ঘণ্টার চেষ্টায় যদি বা খুঁজে পাওয়া গেল চারটি, দেখা গেল, সেগুলির ব্যবহারের তারিখ পেরিয়েছে ২০০৯-এর এপ্রিল মাসে!
আরামবাগ মহকুমার হাসপাতাল-সহ নার্সিংহোম এবং সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছে বিশেষ কমিটি। মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর তত্ত্বাবধানে তিন জনের এই কমিটিতে থাকছেন মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক (মহকুমা হাসপাতালের ক্ষেত্রে সুপার), দমকল দফতরের আরামবাগ স্টেশন অফিসার এবং পূর্ত দফতরের ইলেক্টিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। সোমবার বিকেল থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে এই কমিটি। কিন্তু শুরুতেই চক্ষু চড়কগাছ। মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে একের পর এক অনিয়ম চোখে পড়ল তাঁদের।
ওয়ার্ডগুলিতে একাধিক হিটারের সংযোগ নেওয়া হয়েছে। হিটার জ্বালিয়ে ওয়ার্ডের মধ্যেই দিব্যি চা বানানো হয় বলে জানালেন রোগীরা। জলখাবার, লুচি ভেজে খাওয়া-দাওয়া চলে মাঝে মধ্যেই। কারা করেন এই কাজ? রোগীদের বক্তব্য, নার্স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মী সকলেই তাতে সামিল। বিভিন্ন ওয়ার্ড তো বটেই হাসপাতালের বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ সব মিলিয়ে গোটা কুড়ি হিটারের হদিস মিলেছে এ দিন।
ছবি: মোহন দাস।
এ ছাড়াও দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের ছেঁড়া তার পড়ে। স্যুইচ বোর্ড ভাঙা। তদন্ত কমিটির সদস্যেরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ঘুরে দেখেন শিশু ওয়ার্ড, জরুরি বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার, ব্লাড ব্যাঙ্ক, মেডিক্যাল স্টোর, ক্যান্টিন, জেনারেটর ঘর এমনকী মর্গও। সেখানে স্যুইচ বোর্ডের হাল খতিয়ে দেখেন তাঁরা। সব কিছুই দেখা গেল পুরনো। তবে, হাসপাতালের নবনির্মিত (এখনও চালু হয়নি) নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আধিকারিকেরা।
তদন্তকারীদের পক্ষে দমকল বিভাগের স্টেশন অফিসার প্রবীরকুমার চক্রবর্তী বলেন, “মহকুমাশাসকের কাছে রিপোর্ট পাঠাচ্ছি। হাসপাতালে আরও সিঁড়ি তৈরি করা ছাড়াও বেশ কিছু সুপারিশ করা হবে।” কিন্তু বেনিয়ম দেখলেন কোথায় কোথায়? এ নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে সরাসরি মুখ খোলেননি আধিকারিকেরা। হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় বলেন, “আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি ভাল করে দেখা হয়নি আগে। আগুন নেভানোর কারও প্রশিক্ষণ নেই এখানে। বিষয়টি মহকুমাশাসককে বলা হবে।” সুপার জানান, সোমবার রাতেই হিটারগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মহকুমাশাসক তথা আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অরিন্দম নিয়োগী জানান, হাসপাতালের জন্য আরও ১০টি অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার কেনা হবে। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অগ্নি নির্বাপণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়াও কমিটি যা সুপারিশ করবে, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.