অর্থ দফতর থেকে সাত দিনে ফাইলের জবাব চান মমতা
বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য রাজ্য বাজেটের পরিকল্পনা খাতে ইতিমধ্যে ৭৫% অর্থ মঞ্জুর করেছে অর্থ দফতর। তা সত্ত্বেও টাকার অভাব ও লাল ফিতের ফাঁসে আটকে পড়েছে বহু কাজ। সোমবার টাউন হলে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে একাধিক অফিসারের বক্তব্যে এই ছবিটা উঠে আসায় দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের জন্য অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থ দফতরে ফাইল পৌঁছলে সাত দিনের মধ্যে তার উত্তর দিতে বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ক্ষমতায় আসার পর ছ’মাসের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয় বার রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সময় ধরে উন্নয়নের কাজ শেষ করতে ‘বদ্ধপরিকর’ মুখ্যমন্ত্রী এ দিন কাজের পর্যালোচনা করতে মন্ত্রী, সচিবদের সঙ্গে প্রশাসনের যুগ্মসচিব পর্যায়ের অফিসারদেরও ডেকে নেন। কিন্তু সরকারের বহুবিধ কাজের জন্য পরিকল্পনা বাজেটের টাকা খরচের যে হিসেব তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়, চলতি আর্থিক বছর শেষ হওয়ার সাড়ে তিন মাস আগেও সেই ছবিটা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়।
বৈঠকে উঠে আসে, সরকারের মাত্র তিনটি দফতর (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা, উদ্বাস্তু পুনর্বাসন এবং স্বরাষ্ট্র-রাজনৈতিক) এ পর্যন্ত মোট পরিকল্পনা বাজেটের অর্ধেক টাকা খরচ করতে পেরেছে। ৩১টি দফতর ৩০ শতাংশের বেশি অর্থ খরচ করতে পারেনি। তার চেয়েও খারাপ অবস্থা বাকি দফতরগুলির। তারা অর্থ দফতরের নিয়ম মেনে খরচের হিসেব ঠিকমতো পেশ করতেই পারেনি।
কেন এই হাল? প্রকল্পের ফাইল অর্থ দফতরে পাঠানো হলেও তা ফেরত আসতে মাসের পর মাস কেটে যায় বলে বৈঠকে অভিযোগ করেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী। তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন জানান শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিও। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, অর্থ দফতর এক বারে কোনও প্রশ্নের উত্তর চেয়ে পাঠায় না। এ জন্য ফাইল পাঠালে বার বার তা দফতরে ফিরে আসে।
অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বৈঠকে জানান, কোন দফতর পরিকল্পনা খাতে কত টাকা খরচ করতে পারেনি তার খতিয়ান অর্থ দফতরের ওয়েব সাইটে দেওয়া আছে। কিন্তু মুখ্যসচিব সমর ঘোষ তাঁকে বলেন, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকেও নিয়মিত ভাবে এই তথ্য পাঠানো জরুরি। স্বাস্থ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র বলেন, প্রকল্প অনুমোদনের জন্য শিল্প দফতরের মতো অর্থ দফতরেও ‘এক জানালা’ ব্যবস্থা চালু করা দরকার। না হলে আগামী আর্থিক বছরে পরিকল্পনা বাজেট খরচের হাল আরও খারাপ হবে বলে তাঁর আশঙ্কা।
যে ৩১টি দফতর পরিকল্পনা বাজেটের ৩০%-এর বেশি খরচ করতে পারেনি, তার মধ্যে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে থাকা দফতরও রয়েছে। বৈঠকেই তথ্য ও সংস্কৃতি সচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে টাকা খরচের ব্যাপারে তৎপর হতে নির্দেশ দেন মমতা। একাধিক অফিসার আবার মঞ্জুর হওয়া প্রকল্পের টাকা না-পাওয়ার অভিযোগও তুলেছেন।
সমস্যা ‘সমাধানে’ এ দিন সুনির্দিষ্ট ভাবে দু’টি দাওয়াই বাতলেছেন অমিত মিত্র। প্রথমত, বড় বড় দফতরগুলিতে এক জন করে ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার’ বা আর্থিক পরামর্শদাতা থাকবেন। তিনি হবেন অর্থ দফতরের অফিসার। তাঁর হাতে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থ মঞ্জুর করার ক্ষমতা থাকবে। দ্বিতীয়ত, জানুয়ারি মাসে চালু হবে ‘ইলেকট্রনিক ফাইল ট্র্যাকিং সিস্টেম’। এই ব্যবস্থায় কোন ফাইল, কার কাছে আটকে রয়েছে, তা চিহ্নিত করে সমাধানের পথে দ্রুত এগোনো যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.