১২৭ ঘণ্টার লড়াই এখন সৌরভদের টোটকা
‘১২৭ আওয়ার্স’। এক পর্বতারোহীর জীবনের সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবি উঠে এল সোমবার সকালের ইডেনে!
কী ভাবে হলিউড আর রঞ্জি ট্রফি একাকার? সৌজন্যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অভিনেতা নন। ইনি কর্পোরেট মনোবিদ। মরসুমের শুরুর দিকে মনোজদের ক্লাস নিয়েছিলেন। ‘রোগী’ এখন মোটামুটি কোমায়। ভেন্টিলেটর খুলে তাকে নতুন জীবন দেওয়ার জন্য আবার ডাক পড়ল তাঁর। ভারতীয় দলে রুডি ওয়েবস্টার বা প্যাডি আপটন ক্রিকেটারদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখার যে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন, সেই ভূমিকায় সৌমিত্রকে ডাকা হল অবনমনের খাদের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলার ড্রেসিংরুমে।
সোমবার প্র্যাক্টিসের আগে গোটা টিমকে সৌমিত্র শোনালেন পর্বতারোহী অ্যারন র্যালস্টোনের কাহিনি। কী ভাবে পাহাড়ের সরু খাদে পাথরে চাপা ডান হাত নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে ১২৭ ঘণ্টা অতিমানবিক লড়াই করে গিয়েছিলেন অ্যারন। কী ভাবে শেষমেশ পকেট-ছুরি দিয়ে নিজেই নিজের হাতটা কনুইয়ের নীচ থেকে কেটে বেরিয়ে এসেছিলেন মরণ-গহ্বর থেকে। অ্যারনের দৃষ্টান্ত টেনে লক্ষ্মী-রণদের সৌমিত্র বলেন, ‘অবনমনের কথা ভুলে যাও। ভাবো এই দুটো ম্যাচ থেকে ১২ পয়েন্ট তুলব। জীবনে এ রকম অনেক ‘স্পিডব্রেকার’ আসে। প্রস্তুতি ভাল করেও হয়তো পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর উঠল না। তার মানেই তুমি খারাপ শিক্ষার্থী হয়ে গেলে না।’
সকাল-সকাল মনোবিদের ক্লাস তো হল। কিন্তু আসল পরীক্ষায় তার প্রতিফলন হবে তো? গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে যাবতীয় সংশয়ের ইতি, তামিলনাড়ু ম্যাচের উইকেটেই মঙ্গলবার নামছে বাংলা। বালাজিদের জন্য তৈরি তথাকথিত ‘গ্রিন টপ’ উইকেটে পড়ে ছিটেফোঁটা ঘাস। তা-ও গত শুক্রবার ম্যাচ শেষের পর বেশ কয়েক বার রোলার চালানো হয়েছে। সোজা হিসেব, দিল্লি ম্যাচে বাংলার নীতি ‘ধীরে চলো’। অর্থাৎ দিল্লি ম্যাচ থেকে পাঁচ বা ছ’পয়েন্ট তোলার লক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার নামছে না বাংলা। বাংলা শিবিরের মতে, উইকেটে ঘাস রেখে পাঁচ পয়েন্ট তোলার বড় ঝুঁকি নিয়ে খেলা মানেই হিতে বিপরীত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। তার চেয়ে ব্যাটিং-বন্ধু পিচে তিন পয়েন্টের লক্ষ্যে নামাটা অনেক যুক্তিযুক্ত। বরোদার বিরুদ্ধে বডোদরায় শেষ ম্যাচে সবুজ উইকেট হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। তাই ঘরের মাঠে ঝুঁকি নয়।
যত পয়েন্টের লক্ষ্যেই খেলা হোক, ইডেনের পিচ দেখে নিশ্চয়ই হাসি ফুটবে মনোজ তিওয়ারির মুখে। চেন্নাইয়ের ১০৪-এর পরে যিনি নিজেই সতীর্থদের কাছে অনুপ্রেরণা। প্র্যাক্টিস শুরুর আগে উচ্ছ্বাস কোচ রামনের গলায়, “মনোজের সেঞ্চুরি দলের মনোবল অনেক বাড়িয়ে দিল,” তো মাঠ ছাড়ার আগে বাংলা অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আশ্বাস, অসাধারণ ইনিংস খেলে মনোজের প্রত্যাবর্তন তাঁদের জন্য বাড়তি অ্যাডভান্টেজ।
অ্যাডভান্টেজ আরও আছে। দিল্লির রথী-মহারথীরা মানে সহবাগ, গম্ভীর, কোহলি-রা নেই। ব্যাটিংয়ের নিউক্লিয়াস বলতে শিখর ধাওয়ান, মিঠুন মানহাস ও রজত ভাটিয়া। এ দিন সন্ধের দিকে শহরে পৌঁছনো আশিস নেহরা-ও অনিশ্চিত। চোট নয়, ক্নান্তির কারণে পরপর ম্যাচ খেলতে চান না বলে টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছেন নেহরা।
চোট সমস্যা অবশ্য বাংলারও আছে। পায়ের চোটে অনিশ্চিত পেসার সামি আহমেদ। মঙ্গলবার সকালে তাঁর অবস্থা কেমন থাকে দেখে ঠিক করা হবে সামি প্রথম এগারোয় থাকবেন কি না। নইলে ঢুকবেন বীরপ্রতাপ সিংহ।
হলিউডি ছবি, মনোবিদের ভাষণ, বন্ধুত্বপূর্ণ উইকেট ও মনোজের প্রত্যাবর্তন। ইতিবাচক ও চনমনে নানা মশলা বাংলা শিবিরে মরণ-বাঁচনের এই ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে ঢুকে পড়েছে। মশলা মজুত, কিন্তু বাইশ গজে তা পয়েন্টে রূপান্তরিত হবে তো?




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.