ইস্টবেঙ্গল ২ (সুবোধ কুমার, লেন)
পিয়ারলেস ০ |
ডেম্পো-ইস্টবেঙ্গল ‘যুদ্ধ’ শুরু হয়ে গেল! মাঠে বল পড়ার তিন দিন আগেই!
মাঠে লাল-হলুদের দ্বিতীয় একাদশ কলকাতা লিগের ম্যাচ অবলীলায় জিতছে। অথচ যে কোনও দলের পক্ষে এহেন সুখের মুহূর্ত নিয়ে কারও যেন হেলদোল নেই। রিজার্ভ বেঞ্চে পাশপাশি বসে টোলগে, পেন, ওপারা, মেহতাবরা। তাঁদের পিছনে সুরক্ষা-জালের উপর ভীমরুলের চাকের মতো জমাট ভিড়। তার থেকে দাবি উঠছে, ‘টোলগেদা ডেম্পোর বিরুদ্ধে গোল চাই’, ‘পেনদা ডেম্পোকে হারাতে হবে’। এ সব দেখে ট্রেভর মর্গ্যান মুচকি হাসছেন আর মাথা নাড়ছেন।
পালতোলা নৌকোয় জল ঢুকতে শুরু করেছে। মাঠের ওপারের সামান্য দূরের ক্লাব শুনশান। এটা যেন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুকে আরও আলোকিত করে তুলেছে। মোহনবাগান, মহমেডান-সহ কলকাতা লিগের চারটি ম্যাচ এখনও বাকি। লিগ টেবিলে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। চতুর ব্রিটিশ কোচ কিন্তু বাজারে বলে চলেছেন, “কলকাতা লিগের চালকের আসনে আমরা থাকলেও ট্রফি পেতে আরও তিনটে ম্যাচ জিততে হবে।” কিন্তু কে শোনে কার কথা। কলকাতা লিগ ফের তাঁবুতে আসছে ধরে নিয়েই আই লিগের দিকে হাত বাড়ানোর আব্দার শুরু করেছে সমর্থকরা। |
রিজার্ভ বেঞ্চে তারকারা। মেহতাব, টোলগে, পেনরা উৎসাহ দিচ্ছেন মাঠের ভিতরের জুনিয়রদের। ছবি: উৎপল সরকার |
আব্দার করবেই বা না কেন? ইস্টবেঙ্গল জার্সি পরে যিনি নামছেন তিনিই তো এখন সোনা ফলাচ্ছেন! রিজার্ভ বেঞ্চ আর গ্যালারির ছায়ায় বসতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া লাল-হলুদ ফুটবলারদের পিয়ারলেসকে হারানোর জন্য নামিয়েছিলেন মর্গ্যান। দেবজিৎ মজুমদার, দুই সুনীল কুমার, বুধিরাম টুডু, সুবোধ কুমার, চরণ রাইতাঁরাই তো শেষ করে দিলেন পোড়খাওয়া কোচ শঙ্কর মৈত্রের টিমের যাবতীয় জারিজুরি। দুটো বিদেশি নিয়েও কোনও কিছুই করতে পারল না অফিস ক্লাবটি।
দুটো সেট পিস থেকে দুটো গোল। ঝাড়খণ্ডের সুবোধ কুমারের গোল কুড়ি গজ দূর থেকে সোয়ার্ভিং ফ্রি কিকে। ইম্ফলের লেনের গোলের রাস্তা খুলল পাইতের ফ্রি কিক থেকে। বিরতির আগেই ২-০। সব ঠিকঠাক চললে সেটা ৪-০ হতে পারত। পোস্টের ভেতরে লেগে বল ঠিকরে বাইরে বেরোলে কী আর করা যায়! তাতে অবশ্য আক্ষেপ নেই কোথাও। সুভ্যেনির শপ থেকে দেদার বিক্রি হচ্ছে ক্লাবের জার্সি, পতাকা, ঘড়ি, রিস্ট ব্যান্ড। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে বৃহস্পতিবারের ডেম্পো ম্যাচের টিকিটও।
ডেম্পো ম্যাচের আগেই ইস্টবেঙ্গল এ দিন বাজারে নিয়ে এল গানের নতুন সিডি‘বলে বলে গোল’। সদ্য সাফ চ্যাম্পিয়ন জাতীয় ফুটবলারে ঠাসা টিমের বিরুদ্ধে সেটা করা যে যথেষ্ট কঠিন, মর্গ্যানের চেয়ে বেশি কে জানে? সে জন্য এ দেশে ষোলো মাসের কোচিং জীবনে সম্ভবত প্রথম বার ক্লোজ ডোর প্র্যাক্টিস করাবেন তিনি। জানেন এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। সে জন্য সাংবাদিক সম্মেলনে মর্গ্যান বলে রাখলেন, “বুধবার কিছু বিশেষ মুভ অনুশীলন করাব। ক্যামেরা নিয়ে প্লিজ কেউ মাঠে ঢুকবেন না।”
কলকাতা জয়ের রাস্তা কার্যত পরিষ্কার করে ‘টিম মর্গ্যান’ এখন ভারতমুখী।
ইস্টবেঙ্গল: দেবজিৎ, সৈকত, সুনীলকুমার (জুনিয়র), সুনীলকুমার (সিনিয়র), রবিন্দর, পাইতে (সৌমিক), চরণ, সুবোধকুমার, লেন, বলজিৎ, বুধি (সঞ্জু)।
|
কলকাতা লিগে অভাবিত হারের পর দিন আবার ধাক্কা খেল মোহনবাগানে। সাফ কাপের চোটের জন্য ১৫ দিন মাঠের বাইরে চলে গেলেন সুনীল ছেত্রী। ফলে বেঙ্গালুরুতে বুধবার হ্যালের বিরুদ্ধে তো নয়ই, আরও অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পারবেন না মোহনবাগান স্ট্রাইকার।
|
কলকাতা লিগ
মহমেডান: টেকনো এরিয়ান (যুবভারতী ২-০০)। |