|
|
|
|
খড়্গপুরে পুরসভার সামনে বিক্ষোভ মিছিল কংগ্রেসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
খড়্গপুর পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামল কংগ্রেস। মিছিল করার পাশাপাশি সোমবার খড়্গপুর পুরসভায় বিক্ষোভ দেখায় তারা। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূলের পুরপ্রধান জহর পাল নিজের খুশি মতো পুরসভা চালাচ্ছেন। কাজের মধ্যে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
খড়্গপুর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা বর্তমান কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই পুরসভা কাজ করছে। লক্ষ লক্ষ টাকার সরঞ্জাম কেনা হচ্ছে। কিন্তু তা কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে, সে বিষয়ে কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। এ ভাবে দুর্নীতি হলে তা মেনে নেওয়া যায় না। তাই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হচ্ছি। পুরপ্রধানকে জানিয়েও দিয়েছি, অবিলম্বে কাজে স্বচ্ছতা না আনলে আমরাও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করতে বাধ্য হব।” যদিও এই ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুরপ্রধান জহর পাল। তাঁর কথায়, “দুর্নীতি থাকলে প্রমান দিয়ে দেখাক। মুখে বললে তো হবে না। আসলে আমরাই দুর্নীতিমুক্ত হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। ওয়ার্ডে ঠিক মতো কাজ না করলে অর্থও বরাদ্দ করা হবে না বলেছি। এই কারনেই অনেকে ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছেন।” |
|
—নিজস্ব চিত্র। |
এ দিকে, প্রয়োজনে বোর্ড ফেলে অনাস্থা আনার কথাও ভাবছে কংগ্রেস। কারণ, পুরসভার ৩৫টি আসনের মধ্যে ১৫টি যেমন তৃণমূলের, তেমনই কংগ্রেসেরও ১৫ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। এক জন কাউন্সিলর রয়েছেন বিজেপি-র। আর ৪ জন সিপিএমের। বিজেপি কাউন্সিলর অনেক দিন থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। আর পুরসভা ভাঙাগড়ার খেলায় সিপিএম এখন কংগ্রেসকে সাহায্য করতে পারে বলেই সকলের অনুমান। তা ছাড়া তৃণমূলের মধ্যেও রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ফলে পরিস্থিতি অনেকটাই কংগ্রেসের অনুকুল। প্রথম থেকেই কংগ্রেস পুরসভার দখল নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল। কিন্তু জোট গড়েই পুরবোর্ড চালানোর নির্দেশ দেয় প্রদেশ কংগ্রেস। রাজ্য জুড়ে তাদের পক্ষে ‘হাওয়া’ থাকায় তৃণমূল চেয়ারম্যান পদের দাবি জানায়। পরিবর্তে উপপুরপ্রধানের পদ ছাড়তে রাজি হয় কংগ্রেসকে। তখন কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেয়, তারা বাইরে থেকে সমর্থন করবে। কোনও পদ নেবে না। এত দিন তাই চলছিল।
কিন্তু বর্তমানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জোরদার হয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কংগ্রেস পুরবোর্ড দখলের পরিকল্পনা শুরু করেছে। প্রয়োজন শুধু একটা সংঘাতের। তাই পুরসভার দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের অভিযোগ, পুরপ্রধান বড় জোর এককালীন ৫০ হাজার টাকা খরচ করতে পারেন। কিন্তু অর্থ কমিটিতে পাস না করিয়ে ৩-৪ লক্ষ টাকা খরচ করে বিদ্যুতের সরঞ্জাম, পানীয় জলের সরঞ্জামও কিনে নিচ্ছেন। যে সরঞ্জাম গুদামেও নেই, কোথাও লাগানো হয়েছে তা দেখা যাচ্ছে না। রবিশঙ্করবাবুর কথায়, “তা হলে কী ভুয়ো রসিদে ওই সব কেনা হয়েছে? এত দুর্নীতি হলে মানুষকে তো আমাদেরই জবাব দিতে হবে। তাছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে দেখছি, অবৈধ ভাবে বহুতল বাড়ির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কাউন্সিলরের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও পুরপ্রধান এই সব কাজ করছেনআমাদেরও তো জনগণের কাছে তো জবাবদিহি করতে হবে। তাই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি, পুরসভার কাজে স্বচ্ছতা না থাকলে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করতে পিছু পা হব না।” |
|
|
|
|
|