ডলারে টাকা তলানিতে • সেনসেক্স ফের ১৫ হাজারের ঘরে
এ বার কমলো শিল্পোৎপাদন
শঙ্কাই সত্যি হল। এত দিন কমছিল শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি। এ বার কমলো উৎপাদনই। অক্টোবরের জন্য প্রকাশিত হিসেবে উল্টো দিকেই ঘুরল শিল্পের চাকা। উৎপাদন এক ধাক্কায় কমল ৫.১%। গত দু’বছরেরও বেশি সময়ে এত নীচে নামেনি শিল্পোৎপাদন। এই অবস্থায় শিল্পে উৎসাহ জোগাতে শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার ঋণনীতিতে সুদ কমানোর পথেই ফিরতে পারে বলে ইতিমধ্যেই আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৩ বার সুদ বাড়ানোর পর নিদেনপক্ষে শীর্ষ ব্যাঙ্ক এ বার তা অপরিবর্তিত রাখুক, দাবি শিল্পমহলেরও।
উৎপাদন কমার ঢেউ শেয়ার বাজারে এসে পড়ায় সেনসেক্সও সোমবার ৩৪৩ পয়েন্ট পড়ে নেমে এসেছে ১৫ হাজারের ঘরে। মুছে গিয়েছে লগ্নিকারীদের ৩ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ। এই দু’টি কারণই একজোট হয়ে পতন ডেকেছে টাকার দামে। দেশে শিল্পোৎপাদন অক্টোবরে বাড়ার মুখ না দেখায় বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি বাজার থেকে লগ্নি তুলে নিতে শুরু করলে বাড়তে থাকে ডলারের চাহিদা। সঙ্গে যোগ হয় আমদানিকারীদের তরফ থেকেও ডলার কেনার হিড়িক। ফলে ডলারে টাকার দাম ৮১ পয়সা পড়ে নেমে যায় ভারতীয় মুদ্রার ইতিহাসে সবচেয়ে নীচে। দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৫২.৮৪/৮৫ টাকা।
এত দিন ঢিমে তালে হলেও বাড়ছিল শিল্পোৎপাদন। যদিও সেপ্টেম্বরে তা বেড়েছিল মাত্র ১.৯% হারে। কিন্তু অক্টোবরে সরাসরি কমলো উৎপাদনের পরিমাণ। সঙ্কোচনের জন্য শিল্পমহল ও বিশেষজ্ঞরা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন চড়া সুদের হার, জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দর, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার প্রকোপকে। যা শিল্পের হাতে নগদের জোগান সঙ্কুচিত করে টেনে নামিয়েছে মূলধনী লগ্নিকে। ফলে উৎপাদন গত অক্টোবরের ১১.৩% বৃদ্ধি থেকে এ বার দাঁড়িয়েছে ৫.১% পতনে। এ ছাড়া কারখানা ও খনন ক্ষেত্রে উৎপাদন কমার জেরেই সার্বিক উৎপাদন পড়েছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, অক্টোবরে মূলধনী পণ্য উৎপাদন কমেছে ২৫.৫% (গত বছরের বৃদ্ধি ২১%),খনন ক্ষেত্রে পতন ৭.২%, কারখানায় উৎপাদন ৬%।
ইউরোপের আর্থিক সমস্যার জেরে বিশ্ব বাজারে শেয়ার সূচকগুলির পতনের প্রভাবে ভারতের বাজার গত দু’দিন ধরেই পড়ছিল। শিল্পোৎপাদন কমে যাওয়ার খবরে এ দিন পতনের গতি তীব্র হল। বাজার বন্ধের সময়ে সূচক থামল ১৫,৮৭০.৩৫ অঙ্কে। গত তিন দিনের লেনদেনে সেনসেক্স পড়ল ১০০৭ পয়েন্ট। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বাজার আরও পড়তে পারে। বাজারের মৌলিক উপাদানগুলিই যে ক্রমশ দুর্বল জায়গায় চলে যাচ্ছে, শিল্পোৎপাদনের এতটা পতন তারই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের বাজার থেকে দূরে থাকতেই পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকে।
প্রকৃতপক্ষে শিল্পোৎপাদন কমবে বলে রয়টার্সের সমীক্ষায় আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু বাস্তবে সঙ্কোচন পূর্বাভাসের চেয়েও দশগুণ বেশি। এই পরিস্থিতিতে রাজকোষ ঘাটতি মোট জাতীয় আয়ের ৪.৬ শতাংশে বেঁধে রাখাটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সি রঙ্গরাজন উৎপাদন কমাকে ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেন। নিঃসন্দেহে সবচেয়ে উদ্বিগ্ন শিল্পমহল। তারা কর্মী ছাঁটাইয়ের হুমকি দিয়ে বলেছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উচিত এই মুহূর্তে সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটা। সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই দাবি তুলে বলেন, শিল্পকে মন্দার কবল থেকে এখনই টেনে না তুললে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠবে। অ্যাসোচ্যামের তরফ থেকে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে উপযুক্ত নীতি প্রণয়নের আর্জি জানানো হয়েছে। নতুন করে কেন্দ্রকে আর্থিক ত্রাণ প্যাকেজ চালু করতে বলেছে ফিকি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.