প্রাথমিক স্কুলের চত্বরেই মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল থাকলে সেখানে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে তাদের ছাত্রছাত্রীরা অগ্রাধিকার পাবে। চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা ভর্তি হওয়ার পরে বাকি আসনে লটারির মাধ্যমে বাইরের ছাত্রছাত্রীদের নেওয়া যেতে পারে।
এ ব্যাপারে যাবতীয় বিভ্রান্তি দূর করতে সোমবার বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। বস্তুত বেশ কিছু জেলাতেই এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। সে কারণে স্কুল শিক্ষা দফতরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি তথা উপসচিব এস সি ঘোষের সই করা চিঠিতে সব জেলা প্রশাসনকে এই নতুন নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি বর্ধমান শহরের পাঁচটি স্কুল তাদের চত্বরে অবস্থিত প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সরাসরি না নিয়ে লটারি করার কথা বলেছিল। কিন্তু লটারিতে ভর্তির ফর্ম বিলি শুরু হতেই অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ফর্ম বিলি বন্ধ করে দিতে হয়। জেলার স্কুলসমূহের পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আব্দুল হাই বলেন, “বর্ধমান পৌর বালিকা ও পৌর বালক বিদ্যালয়, টাউন স্কুল, বিদার্থীভবন গার্লস এবং সিএমএস স্কুলে এই সমস্যা হয়েছিল। এ দিন অতিরিক্ত জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদীর থেকে শিক্ষা দফতরের নির্দেশের প্রতিলিপি পেয়েই আমি জেলার সমস্ত স্কুলকে জানিয়েছি। এক মাত্র পৌর বালিকা বিদ্যালয় ছাড়া বাকি সব স্কুলই জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই সরকারি নির্দেশ মানবে।” |
বর্ধমান পৌর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না সিংহ বলেন, “আমিও চিঠি পেয়েছি। তবে প্রাথমিকে উত্তীর্ণ ছাত্রীদের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাকে পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। স্কুল চত্বরে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের একটি মামলাও চলছে।”
আগের শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে জেলার স্কুলগুলি কার্যত নিজের নিয়মে চলত। বেশ কিছু স্কুলে প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে হত একই চত্বরে থাকা প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদেরও। কিছু স্কুল একটি নির্দিষ্ট নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের সরাসরি ভর্তি নিত। বাকিদের পরীক্ষা দিতে হত। এবার সকলের জন্য একই নিয়ম।
অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, একই চত্বরে প্রাথমিক স্কুল থাকলে সেটির পড়ুয়াদের ভর্তিতে অগ্রাধিকারের নির্দেশ আগেই দিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। কিন্তু সেই নির্দেশের প্রতিলিপি হাতে নিয়ে আব্দুল হাইয়ের সঙ্গে দেখা করা হলে তিনি দাবি করেন, সকলের জন্য লটারি করে স্কুলগুলি ঠিকই করছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি উল্টে দুর্ব্যবহার করেন। আব্দুল হাই অবশ্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগ মানেননি। তাঁর বক্তব্য, “২২ নভেম্বর স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশে বলা হয়, নিজেদের সঙ্গে থাকা প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্রদের ভর্তি নিতে হবে মাধ্যমিক বা উচ্চ বিদ্যালয়গুলিকে। কিন্তু আমাদের জেলায় কোনও উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রাথমিক স্কুল নেই। ফলে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। আমরা নির্দেশের ব্যাখ্যা চাই। এখন নতুন নির্দেশ আসায় বিভ্রান্তি দূর হয়েছে।” |