স্কুলের তফসিলি ও আদিবাসী শ্রেণীর ছাত্রাবাসে ভূয়ো পড়ুয়া দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন এক স্কুল কর্মী। শনিবার বালুরঘাটের নাজিরপুর হাই স্কুলের ওই স্কুল কর্মী তথা হস্টেলের কেয়ারটেকার রমেন মালিকে পুলিশ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পরিচালন সমিতির সম্পাদক এবং এক করণিককে পুলিশ খুঁজছে। ধৃত ও অভিযুক্তরা সকলে সিপিএম কর্মী ও এবিটিএ-র সদস্য হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বালুরঘাট থানার আইসি শান্তনু কোঁয়ার বলেন, “অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” এ দিন ধৃত কেয়ারটেকারের বিরুদ্ধে প্রতারণা, প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি এবং জেনেশুনে জাল দস্তাবেজকে আসল বলে ব্যবহারের অভিযোগে মামলা রুজু করে বালুরঘাটের সিজেএম আদালতে তোলা হয়। ধৃতের আইনজীবী অভিজিৎ সরকার আদালতে জামিনের আবেদন করেন। সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মজুমদার জামিনের বিরোধিতা করেন। বিচারক অনির্বান রায় ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই স্কুলে পড়ে না এমন একাধিক ভূয়ো ছাত্রের নাম দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হস্টেলের ভরণপোষনের মাসিক ৭৫০ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গত ২৭ অক্টোবর নাজিরপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রণব কিশোর সরকারের বিরুদ্ধে এই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত ভাবে তদন্তের দাবি জানান জেলা এসসি, এসটি সেলের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ পাহান। স্কুল পরিদর্শক সুবোধ চট্টোপাধ্যায় প্রাথমিক তদন্তে অনিয়ম পেয়ে জেলা এসসি, এসটি সেল কর্তৃপক্ষকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে খাঁপুর এলাকার অভিভাবক হরেন বর্মন ৭ ডিসেম্বর থানায় অভিযোগ করেন, তার ছেলে রামকৃষ্ণ বর্মনকে নাজিরপুর হাই স্কুলের আবাসিক পড়ুয়া দেখিয়ে হস্টেল গ্রান্টের টাকা তুলে নিচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অথচ তার ছেলে খাঁপুর হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। নাজিরপুর হাই স্কুলের তরফে বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য টাকার প্রলোভন দেওয়া হয়েছে। তিনি ওই প্রস্তাবে রাজি না-হওয়ায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নাজিপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রণবকিশোর সরকারের দাবি, “সামনে স্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচন। তাই তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা মিথ্যে অভিযোগ তুলে হেনস্থার চেষ্টা করছেন।” |