জেলা প্রশাসন ও ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি (এনএইচআই) অফ ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষের টানাপোড়েনে মালদহে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ থমকে গিয়েছে। এনএইচআই কর্তাদের অভিযোগ, বার বার আর্জি জানানোর পরেও জেলা প্রশাসন জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দিচ্ছে না। ফলে মালদহে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ থমকে গিয়েছে। অন্যদিকে, জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা সাফ জানিয়েছেন, “জমির টাকা না দিলে কীভাবে আমরা জমি দেব। এখনও পর্যন্ত জমির জন্য এনএইচআই কর্তৃপক্ষ এক টাকাও আমাদের দেয়নি। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জেলা প্রশাসন যাঁদের জমি অধিগ্রহণ করবে তাদের টাকা না দিলে কেন সেই মানুষরা খালি হাতে জমি দেবেন? তা ছাড়া কীভাবে জমি অধিগ্রহণ করা হবে সে ব্যপারে এনএইচআইয়ের কর্তা কিছুই জানাচ্ছেন না। এমনকী জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে জেলা প্রশাসন যে বৈঠক ডেকেছিল সেই বৈঠকে এনএইচআইয়ের কেউ আসেননি। পুরো বিষয়টি রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কমিশনারকে জানিয়েছি।” জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ৩০ মাসের মধ্যে চার লেনের জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১০ মাস কেটে গিয়েছে। মাত্র ২০ মাস বাকি। ফরাক্কা থেকে ময়না প্রায় ৯০ কিলোমিটার লম্বা ৫০ শতাংশ এলাকায় জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে এনএইচআই কর্তৃপক্ষ। জমি হস্তান্তরের বিষয়টি এতটাই ঢিমেতালে চলছে তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ নিয়ে রীতিমতো সংশয় প্রকাশ করেছে খোদ এনএইচআইয়ের প্রজেক্ট ডিরেক্টর মহম্মদ সফিউল্লাহ। তিনি জানান, একাধিকবার জেলা প্রশাসনকে জমির জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। জমি না মেলায় জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ থমকে গিয়েছে। যে জমি অধিগ্রহণ করে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ করা হবে সেই জমির কী দাম হবে তা হিসাব করে অনুমোদনের জন্য দিল্লি পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে ফিরে আসলেই টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। এএইচআইয়ের ডিরেক্টর বলেন, “জমি আমাদের দরকার। জমির জন্য জেলা প্রশাসন মিটিং ডাকবে সেই মিটিংয়ে যাব না এটা হতে পারে না। হয়তো কোনও কারণে যোগাযোগ না হওয়ার জন্য মিটিংয়ে যেতে পারিনি। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ৩০ মাসের মধ্যে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যেখানে সম্প্রসারণের জমি পাওয়া গিয়েছে সেখানে চার লেনের কাজ শুরু করেছে এনএইচআই। ফলে বিক্ষিপ্তভাবে কাজ চলছে জাতীয় সড়কে।” শহরে ঢোকার মুখে বেনফেডের কাছে বাইপাস তৈরি জমি নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বাইপাসের কাজও থমকে রয়েছে। যে এলাকা দিয়ে বাইপাস রাস্তার জন্য প্রথমে নির্ধারণ করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধা দেওয়া পিছু হটতে বাধ্য হন এনএইচআই কর্তৃপক্ষ। সর্বদলীয় বৈঠকে দ্বিতীয় জায়গা নির্ধারিত হওয়ার পরেও সেই এলাকার বাসিন্দাদের আপত্তিতে এখন বাইপাসের কাজও শুরু করতে পারেনি এনএইচআই কর্তৃপক্ষ। |