বেসমেন্ট থেকেই বিপত্তি ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে। আর পার্ক স্ট্রিট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের রান্নাঘরটাও বেসমেন্টেই। সেই রান্নাঘর সরানোকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ বেধেছে শ্রমিক সংগঠনের। আর তাতেই বন্ধ হতে চলেছে ওই হাসপাতাল।
রবিবার রাতেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য হাসপাতাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পার্ক স্ট্রিটের মিশন অফ মার্সি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, এখন থেকে আর নতুন করে কোনও রোগীকে ভর্তি নেওয়া হবে না। যাঁরা ভর্তি রয়েছেন, তাঁদেরও ধাপে ধাপে ছেড়ে দেওয়া হবে।
হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন?
হাসপাতালের মুখপাত্র জানান, বহু দিন ধরেই হাসপাতালের বেসমেন্টে রান্নাঘর ছিল। সম্প্রতি সেটা ট্যাংরায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে হাসপাতালের এসইউসি সমর্থিত কর্মী ইউনিয়নের সদস্যেরা কর্তৃপক্ষের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিক্ষোভকারী কর্মীরা তাঁদের প্রতিনিধিদের গালিগালাজ এবং মারধর করেন। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য তাঁরা হাসপাতাল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এসইউসি সমর্থিত ওই ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ঋতুপর্ণা মহাপাত্রের দাবি, হাসপাতালের বেসমেন্টে রান্নাঘর ছিল। যেটা বিপজ্জনক। বিশেষ করে আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের পরে যা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। ওই রান্নাঘর ছ’তলার নিরাপদ জায়গায় সরানোর দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শ্রমিকেরা। তা না-করে কর্তৃপক্ষ ট্যাংরায় রান্নাঘর সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইউনিয়নের বক্তব্য, এটা অন্য সংস্থার হাতে রান্নাঘর তুলে দেওয়ার চক্রান্ত। এর ফলে প্যান্ট্রিকর্মীরা ছাঁটাই হবেন বলে আশঙ্কা করছে ইউনিয়ন। তাদের বক্তব্য, অত দূর থেকে রোগীদের খাবার সরবরাহ করা সম্ভব নয়।
হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ অবশ্য কর্মী ছাঁটাইয়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ‘আমাদের রান্নাঘর কলকাতা পুরসভার আইন অনুসারেই অনুমোদিত। কিন্তু সম্প্রতি আমরির ঘটনার পরে আমরা হাসপাতাল থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এর সঙ্গে আউটসোর্সিং বা কর্মী ছাঁটাইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের আগের কর্মীরাই ওই রান্নাঘরে কাজ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।” এই সিদ্ধান্তে সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মীর মত ছিল বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
ওই হাসপাতালে এখন কত জন রোগী আছেন? হাসপাতালের এক মুখপাত্র জানান, ৯০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২২-২৩ জন গুরুতর অসুস্থ। ওই রোগীদের শহরের অন্য হাসপাতালে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। রোগীদের স্থানান্তরিত করার ব্যাপারে তাঁদের পরিবারকে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ সাহায্য করবেন বলেও জানানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রবিবার রাতেও এক জন রোগী আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। |