কেন্দ্র যখন এনডিএফবির সংগ্রামপন্থী নেতা রঞ্জন দইমারির সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই সময় ইরঞ্জনপন্থী জঙ্গিদের হুমকিতে, কোকরাঝাড়ের রূপনাথ ব্রহ্ম অসামরিক হাসপাতাল ছেড়ে ‘পালালেন’ ৪০ জন চিকিৎসক। নজিরবিহীন এই ঘটনার জেরে জেলার এসপি ও পুলিশ কর্তাদের বদলি চাইল আবসু। বের করা হয়েছে প্রতিবাদ মিছিল। রোগীদের চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক পাঠিয়েছে এনআরএইচএম। সন্ধ্যায় আরও জানা যায় গোঁসাইগাঁও সিভিল হাসপাতাল থেকেও ‘উধাও’ ১০ ডাক্তার। রূপনাথ ব্রহ্ম হাসপাতালে ২০০টি শয্যা রয়েছে। চিকিৎসক ৩০ জন। এঁদের মধ্যে, অন্তত ২০ জনের বাড়ি কোকরাঝাড় বা তার আশপাশে। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে একে একে সব চিকিৎসকের কাছে এনডিএফবি (রঞ্জন) গোষ্ঠীর তরফ থেকে ফোন আসে। প্রত্যেককে শনিবার সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে এক লক্ষ টাকা করে চাঁদা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমন ফোন পেয়ে ঘাবড়ে যান চিকিৎসকেরা। গত কাল ২৮ জন চিকিৎসক একযোগে হাসপাতালে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে চলে যান। আজ বাকি দুইজনও উধাও। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাসপাতালের সাধারণ বিভাগে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে চার পুরুষ ও এক মহিলা রোগী বাদে বাকিরা হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র ভর্তি হয়েছেন। কয়েকজনকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে এখনও ভর্তি রয়েছেন ১৮ জন গর্ভবতী মহিলা।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গত কালই এনআরএইচএম ২ জন চিকিৎসককে কোকরাঝাড় পাঠায়। এলাকার অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎকরা স্বেচ্ছায় রোগীদের চিকিৎসা করতে এগিয়ে এসেছেন। আজ বিকালে, রাজ্য সরকার আরও দুইজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞসহ চার চিকিৎসকে রূপনাথ ব্রহ্ম হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ আবসু, কোকরাঝাড়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলকারীরা শহর ঘোরার পরে মিছিল রাজমেলার মাঠে জড়ো হন। সেখানে, ছাত্র সংগঠন ছাড়াও, সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সন্ত্রাস ও তোলাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন। চিকিৎসকদের পাশাপাশি, শিক্ষক, সরকারি কর্মচারীরাও নিয়মিত জঙ্গি হুমকির মুখে পড়ছেন। অথচ, পুলিশ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। এর প্রতিবাদে, জেলার এসপি পি কে দত্ত ও ঊধ্বর্র্তন পুলিশ অফিসারদের বদলির দাবি ওঠে। ঘটনার নিন্দা করেন বড়োল্যান্ড স্বশাসিত পরিষদের প্রধান হাগ্রামা মহিলারি। মহিলারি ও আবসু সভাপতি প্রমোদ বড়ো নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। |