হাসপাতালে অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা সমীক্ষার নির্দেশ
ড়শি রাজ্যের নামী হাসপাতালে প্রলয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিতে উদ্যোগী অসম সরকার। তাই রাজ্যের সব জেলার হাসপাতালে অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী একযোগে এই ব্যাপারে নির্দেশ দিচ্ছেন সব জেলাশাসককে। কাল সোমবার, এ নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা জেলাশাসকদের দফতরে পৌঁছে যাবে।
বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে অসমের হাসপাতাল ও স্কুলগুলি বরাবরই ‘বিপজ্জনক’। ভূকম্পপ্রবণ হওয়ায় রাজ্যের হাসপাতাল, স্কুল ও বহুতলগুলির বিপদের আশঙ্কা অনেক বেশি। অগ্নিকাণ্ড ঘটে গেলে তা মোকাবিলায় প্রধান সমস্যাগুলি হল--দমকলের গাড়ির সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত সীমিত, বড় বহুতল ও হাসপাতালগুলির আশপাশে সড়ক অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেশ অপরিসর, এ ছাড়াও আগুন নেভাতে যেটা সব থেকে জরুরি, সেই জলের উৎসও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অমিল।
গ্রামের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মূল সমস্যা ভবনগুলির কাঠের কাঠামো। শহরের মূল সমস্যা অপরিসর এলাকা ও অবৈজ্ঞানিক নির্মাণ। এই অবস্থায়, কলকাতার আমরি বা স্টিফেন কোর্ট অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপর্যয় যাতে না ঘটে, তাই দ্রুত রাজ্যের হাসপাতাল ও স্কুলগুলির অগ্নি-মোকাবিলার পরিকাঠামো নিয়ে সমীক্ষা সেরে ফেলতে চান স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তবে, সরকারি হাসপাতালগুলিতে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা তেমন নেই। সেই ব্যবস্থা রয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে। তাই হিমন্তর নির্দেশ, ‘এক মাসের মধ্যে, রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা হবে। দেখা হবে সকলে দমকলের নিয়ম ঠিকমতো মানছেন কিনা, অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে হাসপাতাল কর্মীদের প্রশিক্ষণ রয়েছে কিনা, হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে বেআইনি দাহ্য বস্তু জমা করা রয়েছে কিনা এবং হাসপাতালের সিঁড়ি ও অন্যান্য বের হওয়ায় জায়গা পর্যাপ্ত প্রশস্ত কিনা।’
হিমন্ত বলেন, “আগুন লাগলে সব থেকে অসহায় অবস্থা হয় রোগী ও শিশুদের। তাই জেলার সব হাসপাতাল ও স্কুলগুলিতে আগামী তিরিশ দিনের মধ্যেই সমীক্ষা সেরে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছি। প্রশাসন ও দমকলের যৌথ উদ্যোগে এই সমীক্ষা হবে। কেউ আইন না মেনে থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার।”
কী হতে পারে কড়া ব্যবস্থা? মন্ত্রী বলেন, “সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে যদি দেখা যায় কোনও স্বাস্থ্য বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অগ্নি নির্বাপণ পরিকাঠামোয় ত্রুটি রয়েছে তবে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হবে। যদি দেখা যায়, জেনেশুনে কেউ আইন ভেঙেছেন ও রোগী বা ছাত্রদের জীবন নিয়ে অবহেলা দেখিয়েছেন-তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা বা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ার মতো শাস্তি অবধি হতে পারে।”
মন্ত্রী এও মেনে নেন, রাজ্যের পুরোনো কাঠের তৈরি স্কুল ও হাসপাতালগুলি অগ্নিসুরক্ষা আইন চালু হওয়ার আগে তৈরি। তেমন হাসপাতাল ও পুরনো স্কুলগুলিতে, দমকল বিধি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা না-ও হতে পারে। জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হবে, সে ক্ষেত্রেত্রে, প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তাব্যক্তিদের দমকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে সুরক্ষা-নকশা বানিয়ে ফেলতে হবে। মন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরে, কামরূপ (মেট্রো) প্রশাসন গুয়াহাটির সব হাসপাতাল, নার্সিংহোম ও স্কুলের পাশাপাশি, বহুতলেও সমীক্ষার কাজ শুরু করবে বলে জানানো হয়েছে। হিমন্ত জানান, পরের বছরের বাজেটে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালে অগ্নি নির্বাপণ বিধি চালু করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, “রাজ্যের সব জন-প্রতিষ্ঠানেই অগ্নি সুরক্ষা বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলা উচিত। হাসপাতাল, স্কুলগুলিতে দমকলের নিয়মবিধি সঠিক ভাবে মানা হচ্ছে কী না তা লক্ষ্য রাখতে, সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.