সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ ২১ হাজার মেট্রিক টন ধার্য করল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। জেলার খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের অধিকর্তা সমীর দেব বলেন, “চাষিদের অভাব রুখতেই লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান কেনা চলবে। জেলার ২৫৪টি পঞ্চায়েতের প্রতিটিতে শিবির করে ধান কেনা হবে। এ পর্যন্ত প্রথম দফায় ২৬টি ব্লকে ১১ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। এক সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় দফায় ধান কেনা শুরু হবে।”
রবিবার সাগরদিঘির বোখরা-১ পঞ্চায়েতের সাঁকোপাড়ায় সকাল থেকে শিবির করে ধান কেনা শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলার খাদ্য অধিকর্তা। জঙ্গিপুরের এসডিও এনাউর রহমানও। ছিলেন প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা। খাদ্য অধিকর্তা বলেন, “এ পর্যন্ত কান্দি মহকুমার গ্রামগুলি থেকে সবথেকে বেশি পরিমান ধান কেনা হয়েছে। পঞ্চায়েতগুলিতে শিবির করায় চাষিদের ক্ষেত্রেও সুবিধা হচ্ছে। এই ধান থেকেই জেলার চাল কলগুলির তৈরি করা চালই কিনবে জেলা প্রশাসন।” বোখরা-১ পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের মির বদরুল হকের অভিযোগ, “পঞ্চায়েতটি কংগ্রেসের দখলে থাকায় আমাদের না জানিয়েই তৃণমূলের পৃষ্ঠপোষকতায় ধান কেনা হচ্ছে। প্রকৃত চাষিদের চিহ্নিত করার কথা পঞ্চায়েত কর্তাদের। কিন্তু তা না করে ঘুরপথে দালালদের কাছ থেকে ধান কিনছে মিল মালিকেরা।” |
খোলা বাজারে কুইন্টাল প্রতি ধানের দাম ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। সরকারি শিবিরে চাষিরা কুইন্টাল প্রতি ১০৮০ টাকা দাম পাচ্ছেন। পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগ, “ফড়েরাই চাষির ছদ্মবেশে ধান বিক্রি করছে। পঞ্চায়েতকে এড়িয়ে এ ভাবে শিবির করলে অভাবী চাষিদের সমস্যার কোনও সমাধান হবে না।”
শিবিরে ধান বিক্রি করতে এসে স্থানীয় চাষি বানী ইসরাইল অভিযোগ করলেন, “গত দু’বছর ধানের দাম বাজারে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা ছিল। তখন সারের দাম ছিল ৫৪০ টাকা।এ বারে সারের দাম সাড়ে আটশো টাকা। আর কুইন্টাল প্রতি ধানের ক্রয়মূল্য করা হয়েছে ১০৮০ টাকা। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।” চাষি আবদুল কাদেরের অভিযোগ, “সেচের জল কিনে এক বিঘায় ধান লাগাতে খরচ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকা। খুব ভাল ফলন হলেও ৫ কুইন্টালের বেশি হবে না। সেক্ষেত্রে লাভ কোথায়?” জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসক এনাউর রহমান বলেন, “সরকারের ধার্য করা দাম দেওয়া হচ্ছে চাষিদের। টাকা মিলছে চেকের মাধ্যমে। দুর্নীতির অভিযোগ থাকার কথা নয়। কারোর অভিযোগ থাকলে তাঁরা প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।” তৃণমূলের প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, “চাষিদের বাঁচাতেই এই শিবির। পঞ্চায়েতকে সঙ্গে নিয়েই সর্বত্র এই শিবির করা হচ্ছে। উপেক্ষার কোনও প্রশ্নই নেই।” |