রাজ্যের বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন টালিগঞ্জের উন্নয়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রবিবার সন্ধ্যায় টেকনিশিয়ান্স স্টুডিও-র সংস্কার ও নবনির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাসের মাধ্যমে তা রক্ষায় এক ধাপ এগোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এই স্টুডিও সংস্কার ও নবনির্র্মাণ কাজে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, “চলতি বছরে ১০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। বাকি ৮ কোটি টাকা আগামী বছরে খরচ হবে।” রাজ্যের পূর্ত দফতর সংস্কারের কাজ করবে। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির সভাপতি, অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক জানান, স্টুডিওটিতে অত্যাধুনিক নতুন ৬টি ‘ফ্লোর’ তৈরি হবে। অনুষ্ঠানে আমরির অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের উদ্দেশে শ্রদ্ধাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
সেখানকার কলাকুশলীদের পেনশনের ব্যবস্থাও সরকার করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। তাঁর কথায়, “এই স্টুডিও থেকে রাজ্য সরকারের আয়ের ২০% টাকা এখানকার কলাকুশলীদের অবসরকালীন পেনশন প্রকল্পে জমা করা হবে।” সেই সঙ্গে তিনি জানান, টালিগঞ্জের দুঃস্থ শিল্পী ও কলাকুশলীদেরও অর্থ সাহায্যেরও পরিকল্পনা করেছে তাঁর সরকার। এই বিষয়ে অভিনেতা প্রসেনজিতের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রাথমিক কথাও হয়েছে।
বস্তুত, বছর তিনেক আগে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই স্টুডিওটি একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সেই সময়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে টালিগঞ্জের কলাকুশলীদের অনেকেই আন্দোলন করেছিলেন। অরূপবাবু এ দিন দাবি করেন, “সে দিন দিদির নির্দেশে আন্দোলন করে আমরা যেমন টেকনিশিয়ান্স স্টুডিওর বিক্রি আটকে ছিলাম, আজ ক্ষমতায় এসে আমাদের নেত্রী সেই স্টুডিও-র সম্প্রসারণের কাজও করছেন।” অনুষ্ঠানে এ দিন উপস্থিত ছিলেন ৯৫ বছর বয়সী চিত্রগ্রাহক রামানন্দ সেনগুপ্ত। এক সময়ে রামানন্দবাবু এই স্টুডিওর অংশীদারও ছিলেন। মমতা রামানন্দবাবুকে দিয়েই শিলান্যাস করান। আবেগাপ্লুত প্রবীণ এই ক্যামেরাম্যান মমতাকে ‘টালিগঞ্জের মা’ বলে অভিহিত করেন।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী চৌধুরী মোহন জাটুয়া জানান, ‘সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইন্সস্টিউট’ চত্বরে আধুনিক মানের একটি স্টুডিও তৈরির কাজও শীঘ্রই শুরু করা হবে। |