নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
দুবরাজপুর গার্লস স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের দিন ধার্য হয়েছিল ১৮ ডিসেম্বর। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন পার হওয়ার পরে শুধুমাত্র তাদের সমর্থিত ৬ জন প্রার্থী থেকে যাওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে বলে দাবি কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিজেপি জোট। জোটের পক্ষে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা দুবরাজপুরের পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “আমরা জোটের পক্ষে ৬ জন প্রার্থীকে ওই নির্বাচনের জন্য দাঁড় করিয়েছিলাম। ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরে একই ফল থেকে যাওয়ায় আমরা জিতেছি। বাম সমর্থিত কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি বা প্রত্যাহার করেননি।” যদিও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রেখা পাল অবশ্য এতটা খোলাখুলি ভাবে কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত এক পক্ষের ৬ জন প্রতিনিধি রয়েছেন। এর বেশি কিছু আমি বলব না। ১৮ ডিসেম্বর পার হলে বলব।”
এ প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধন ঘোষ অবশ্য বলেছেন, “মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ নিয়ে আমাদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিল। তাই ওই স্কুলের আমাদের সমর্থিত প্রার্থীদের দাঁড় করাতে পারিনি।”
অন্য দিকে, বাম সমর্থিত কোনও প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা না দেওয়ায় দুবরাজপুরের যশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে জয়ের পথে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট সমর্থিত ৬ জন প্রার্থী। জোটের দাবি, শনিবার ওই স্কুলে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পার হয়ে যাওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। প্রসঙ্গত, ওই স্কুলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার রাতে যশপুর গ্রামে সিপিএমের বন্ধ লোকাল কমিটির অফিস থেকে অস্ত্র ও বোমা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগে দুবরাজপুরের বিডিও গোবিন্দ দত্তের উপস্থিতিতে পুলিশ সেখান থেকে একটি মাস্কেট, পাইপগান, তিনটি বোমা উদ্ধার করে। যদিও ঘটনার দায় তৃণমূলের উপরে চাপিয়েছে সিপিএম।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধন ঘোষের দাবি, “শুক্রবার বিকেলে ওই পার্টি অফিসের বাইরে আমাদের কিছু সদস্য দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় তৃণমূলের বেশ কিছু লোক অতর্কিতে আমাদের লোকেদের উপরে চড়াও হয়। মারধর করে। বোমা ফাটায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আমাদের লোকেরা পার্টি অফিস অরক্ষিত রেখে পালিয়ে আসেন। তার পরে তৃণমূলের লোকেরা বোমা, অস্ত্র রেখে তালা দিয়ে পুলিশে খবর দেয়।” তিনি বলেন, “এই ঘটনার আমরা তিব্র প্রতিবাদ করছি। চাই প্রকৃত তদন্ত হোক। তা হলে সত্য ঘটনা উঠে আসবে।”
কংগ্রেস ও তৃণমূল জোটের দাবি, শুক্রবার বিকেলে ওই স্কুলে দাঁড়ানো প্রার্থীদের সঙ্গে পরিচয় পর্ব শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে আমাদের সমর্থকদের দেখে সিপিএমের ওই পার্টি অফিসের কাছে বোমা ফাটায় ওরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুভাষ ভাড়ারী বলেন, “শুধুমাত্র স্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচন বানচাল করার জন্য সিপিএম এ কাজ করেছে। পার্টি অফিসের কাছে বোমা ফাটানোয় আমাদের সন্দেহ হয় বন্ধ পার্টি অফিসে আরও বোমা আছে। তাই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। সেই সন্দেহ সত্য প্রমাণিত হয়েছে।” সিপিএমের পাল্টা দাবি, অন্যায় ভাবে আমাদের পার্টি অফিসে অস্ত্র রাখা ও দলীয় কর্মীদের মারধর করায় ওই স্কুলের নির্বাচনে প্রার্থী দিইনি। কংগ্রেস নেতা পীযূষ পাণ্ডের কথায়, “পার্টি অফিসের মধ্যে অস্ত্র মেলায় অস্বস্তিতে পড়ে সিপিএম। তাই ওই স্কুলের নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি তারা।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। |