|
|
|
|
দু’বছরের মধ্যে পোলিও ১১৭ থেকে শূন্যের পথে |
নিজস্ব সংবাদতা • পটনা |
পোলিও যেখানে ছিল আতঙ্ক, প্রশাসনের চরম উদ্বেগের কারণ, সেই বিহার চলতি বছরে অনেকটাই স্বস্তিতে। কারণ, গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে রাজ্যে একটিও পোলিও রোগ ধরা পড়েনি। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব সঞ্জয় কুমার বলেন, “গত এক বছরে একটিও পোলিও রোগী রাজ্যের কোথাও পাওয়া যায়নি। আমরা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে বিহারকে পোলিও মুক্ত করতে পারি।”
এক সময়ে দেশের মধ্যে বিহার ও উত্তরপ্রদেশ পোলিও রোগীর সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে ছিল। ২০০৯ সালে বিহারে ৩৮টি শিশু পি-১ পোলিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। সব মিলিয়ে শুধু বিহারেই পোলিও আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৭। সেখান থেকে মাত্র দু’বছরের মধ্যে পোলিও আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে নেমে যাওয়া রীতিমতো কৃতিত্বের বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তবে স্বস্তিতে হলেও, সন্তুষ্টিতে যে তাঁরা ভুগছেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তাঁরা। রাজ্যের ৪১টি ব্লক এখনও পোলিওর নিরিখে যথেষ্ট সংবেদনশীল বলেই তাঁরা চিহ্নিত করেছেন। দু’বছর আগেও এই ৪১টি ব্লককে ‘হাই রিস্ক জোন’ হিসেবে গণ্য করা হত। স্বাস্থ্যসচিব বলেন, “সরকারি ভাবে এখনও রাজ্যকে পোলিও মুক্ত বলা হচ্ছে না। আমরা পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এ রাজ্যের শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম হওয়ায় শিশুরা বারবার ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হত। এর ফলে ওষুধ মলের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার কারণেই পোলিও টিকা খাওয়ালেও কোনও লাভ হত না। ২০০৯ সালে বেশ কয়েকটি শিশুর ক্ষেত্রে টিকা নেওয়ার পরেও পোলিও হওয়ার অভিযোগ মেলে। এর পরেই রাজ্য সরকার শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়।
এ ছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, প্রতি মাসে নিয়ম করে পোলিও প্রতিষেধক দেওয়া, রাজ্যের বিভিন্ন উৎসবের সময়, শিবির করে পোলিও প্রতিষেধক খাওয়ানো এবং মেলাগুলিতে পাঁচ বছরের নীচের শিশুদের পর্যবেক্ষণ করার ফলও মিলেছে।
অনেক ক্ষেত্রেই বিহারে পোলিও আমদানি হত প্রতিবেশী দেশ নেপাল থেকে। সেই কারণে গত দু’বছর ধরে বিহার-নেপাল সীমান্তেও কড়া নজরদারি চালানো হয়েছে। ইউনিসেফের এক কর্তার কথায়, “রাজ্য সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে বিষয়টি সামলেছে। প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে যাওয়া এবং লাগাতার প্রচার, পোলিও প্রতিরোধে বড় ভূমিকা নিয়েছে।” একই সঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েত এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিও এই ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতার পরিচয় দিচ্ছে বলে ইউনিসেফ মনে করছে। |
|
|
|
|
|