দোকান থেকে ভিড়ে ঠাসা রাস্তায় ডেকে এনে এক যুবককে গুলি করে খুন করল দুই দুষ্কৃতী। তার পরে রিকশায় চড়ে তারা পালালেও ঘণ্টাখানেক বাদে এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে ভদ্রেশ্বরের চাঁপদানিতে। নিহতের নাম রাকেশপ্রসাদ গুপ্ত (৩০)। বাড়ি চাঁপদানি পুরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বি এম রোডে। পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে ওই যুবককে খুন করা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির কাছেই একটি ঘনবসতিপূর্ণ সরু গলির ভিতরে রাকেশের মদের দোকান রয়েছে। এ দিন তিনি বাজার সেরে বাড়ি ফিরে খাওয়া করে ৯টা নাগাদ দোকান খোলেন। সেই সময়ে রাস্তাটি ছিল ভিড়ে ঠাসা। বহু মানুষ দোকান-বাজার করতে বেরিয়েছিলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই দুই দুষ্কৃতী হেঁটে রাকেশের
নিহত রাকেশপ্রসাদ গুপ্ত। |
দোকানে ঢোকে। সেই সময়ে দোকানে কোনও ক্রেতা ছিলেন না। দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে রাকেশকে বের করে। কোনও কথা বলার সুযোগ না দিয়ে এক দুষ্কৃতী তাঁর কপালে সরাসরি গুলি চালিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় রাকেশ লুটিয়ে পড়তেই দুষ্কৃতীরা পাশ দিয়ে যাওয়া একটি রিকশাকে থামিয়ে তাতে উঠে পালায়। কয়েক মিনিটের এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজন প্রথমে হকচকিয়ে যান। দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় তাঁরা বাধা দিতে সাহস করেননি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাকেশের। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠায়।
তদন্তে নেমে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই এলাকারই একটি দোকানের সামনে থেকে এই খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই এলাকারই বাসিন্দা। তাকে জেরা করা হচ্ছে। অন্য দুষ্কৃতী এসেছিল বাইরে থেকে। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ঠিক কী কারণে ওই যুবককে খুন করা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাকেশকে কেন খুন করা হল, তা নিয়ে অন্ধকারে তাঁর পরিবারের লোকজনও। স্ত্রী সঙ্গীতা ও পাঁচ ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার ছিল রাকেশের। স্বামী খুন হয়েছেন জানতে পেরে সঙ্গীতা তখনই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, “কারা কেন ওকে খুন করল কিছুই বুঝতে পারছি না। ও কখনও কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত না। ব্যবসা নিয়ে কারও সঙ্গে বিবাদ হয়েছিল বলেও তো জানি না।” নিহতের ভাই বিনোদপ্রসাদ বলেন, “দাদা সব সময় ব্যবসা নিয়েই থাকত। কারও সঙ্গে কোনও বিবাদ ছিল না। কেন যে দাদাকে খুন করা হল বুঝতে পারছি না।” বিনোদপ্রসাদই থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। |