আটক প্রাক্তন মেয়র
ঢাকাকে ভাগ করার প্রতিবাদে বন্ধ, সংঘর্ষ
প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন রাজধানী-শহর ঢাকাকে দু’টি এলাকায় ভাগ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের রাজনীতি। সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিরোধী দল বিএনপি-র ডাকা বন্ধে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ঢাকা। দোকানপাট ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন দিলেন বিক্ষোভকারীরা এবং তা রুখতে পুলিশ লাঠি চালালে জখম হলেন ৮ জন। শহরের পুরনো অংশের আদালত পাড়ায় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন বিরোধী দল বিএনপি-র কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশের একটি ভ্যান এবং মোটরবাইকে আগুন লাগিয়ে দেয় বন্ধ সমর্থনকারীরা। শহরের ওই অঞ্চলে সে সময় একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র এবং বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা।
সশস্ত্র পুলিশ খোকাকে ঘিরে ধরে একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, এই ছবি টিভির পর্দায় দেখা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, খোকার নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাঁকে কিছু ক্ষণের জন্য আটক করা হয়েছিল। বিএনপি-র অভিযোগ, পুলিশি হেফাজতে খোকাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এই কারণেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ঢাকা আদালত চত্বরে জ্বলছে পুলিশের ভ্যান। ছবি: এএফপি
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, ঢাকা কোর্ট চত্বরে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। এতেই আট জন জখম হন বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক চিত্র সাংবাদিকের কথায়, “বিএনপি সমর্থক এবং বন্ধ সমর্থনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের ১০০টি সেল ছুড়েছে পুলিশ।” বিএনপি-র কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম আলমগিরের অভিযোগ, ১০০-রও বেশি দলীয় কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামি লিগের এই পদক্ষেপ দেশ জুড়ে সরকার-বিরোধী আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করবে। এই সমস্যাকে কেন্দ্র করে বিএনপি যে দেশ জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছে, আলমগিরের কথায় তার ইঙ্গিত স্পষ্ট।
এ দিন সারা শহর জুড়েই বন্ধের প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে। স্কুল-কলেজ, দোকানপাট সবই প্রায় বন্ধই ছিল। ঢাকার রাস্তায় যানবাহনও খুব কম দেখা গিয়েছে। শহর জুড়ে পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন দিনভর টহল দিয়েছে।
আজই বিভক্ত ঢাকা পুরসভার দু’ জন ‘প্রশাসক’ নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুধু তা-ই নয়, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ঢাকা পুরসভা উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচন সেরে ফেলা হবে বলেও সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহেই ঢাকা পুরসভা ভাগ করার সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টে পাশ হয়। প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান আইনটিতে স্বাক্ষর করায় তা সাংবিধানিক বৈধতা পায়। পুরসভা ভাগ করার সিদ্ধান্তের সমর্থনে পার্লামেন্টে আনা বিলটিতে বলা হয়, ‘ঢাকার জনসংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে একটি কর্পোরেশনের পক্ষে নাগরিকদের যোগ্য পরিষেবা দেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই নাগরিকেরা প্রয়োজনীয় পরিষেবা পাচ্ছেন না।’ এই আইনটি পাশ হওয়ার পরই ঢাকা পুরসভা ভেঙে দেওয়া হয়। পুরসভার প্রাক্তন মেয়র খোকা এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে হলফনামা দাখিল করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.