|
|
|
|
এইচআইভি আক্রান্ত দুই মায়ের প্রসব খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
দুই এইচআইভি আক্রান্ত প্রসূতি সন্তানপ্রসব করলেন খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে। শনিবার সকালে এক প্রসূতির স্বাভাবিক ভাবে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। রবিবার দুপুরে আর এক প্রসূতির অস্ত্রোপচারের পরে তাঁর এক পুত্রসন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। হুগলিতে এইচআইভি আক্রান্ত মহিলার প্রসব নতুন নয়। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গ্রামীণ এবং ব্লক হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে খানাকুল ‘নজির’ গড়ল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক উন্মেষ বসু বলেন, “খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, তা গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বিশেষ উল্লেখযোগ্য। স্বাস্থ্যকর্মীরা অনুপ্রাণিত হবেন।”
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তথা খানাকুল ১ বিএমওএইচ সব্যসাচী সাহা বলেন, “গর্ভবতী মহিলাদের রক্ত পরীক্ষার সময়ে ওই দুই মহিলার ক্ষেত্রে এইআইভি পজেটিভ ধরা পড়ে। ন’মাস আগে ওই পরীক্ষার পরে আমরা বিশেষ নজরে রেখেছিলাম। পরিকল্পনা ছিল, প্রসবের ব্যবস্থা এখানেই করব। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ছাড়াও এই ঝুঁকির কাজটা করা গিয়েছে স্রেফ হাসপাতালের সমস্ত কর্মীর উদ্যোগ ও উৎসাহে।”
সদ্যপ্রসূতি দুই মহিলাই জানান, রোগ ধরার পরে ভেবেছিলেন গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করে ফেলবেন। ডাক্তারদের কাছ থেকেও এত ভাল ব্যবহার আশা করেননি কেউ। তবে সন্তানদের এই রোগ হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। চিকিৎসকেরা ভরসা দেওয়ায় সন্তানের জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
বিএমওএইচ জানিয়েছেন, হাসপাতালে কোনও শিশু বিশেষজ্ঞ নেই। এক জন অ্যানাস্থেটিস্ট এবং দুই সাধারণ বিভাগের চিকিৎসককে নিয়েই কাজকর্ম চলে। শিশু বিশেষজ্ঞ চেয়ে বহু বার জেলায় দরবার করেও সুরাহা হয়নি। অথচ, রোগীর চাপ এখানে খুবই বেশি। হাসপাতালের দুই চিকিৎসক সুশান্ত পাল এবং প্রসেনজিৎ পালেরা বলেন, “যথাযথ প্রসব হবে কিনা, তা নিয়ে একটা আশঙ্কা ছিলই। কিন্তু কাজটা সফল ভাবে করতে পেরে এখন খুবই ভাল লাগছে।”
এ ধরনের প্রসূতির ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় চিকিৎসকদের। তার ব্যবস্থা ছিল হাসপাতালে। সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে দুই মা ও তাঁদের সন্তানকে সাধারণ বিভাগেই রাখা হয়েছে বলে জানালেন চিকিৎসকেরা। এতে কোনও ঝুঁকি নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
সব্যসাচীবাবু বলেন, “মায়ের কাছ থেকে শিশুর মধ্যে সংক্রমণ এড়ানোর জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা করেছি। তা সত্ত্বেও সংক্রমণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ছ’সপ্তাহ বাদে শিশু দু’টির রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|