|
|
|
|
ওয়ার্ডে বাজবে রবীন্দ্রসঙ্গীত |
হাসপাতালের হাল ফেরাতে উদ্যোগী গৌতম |
নমিতেশ ঘোষ • শিলিগুড়ি |
ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বাজবে রবীন্দ্রসঙ্গীত। আধুনিক মানের চিকিৎসা ব্যবস্থায় গড়ে তোলা হচ্ছে সদ্যোজাত শিশুদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড (সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট)। হাসপাতাল ভবন নতুন ভাবে রং করা হবে। পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে সর্বত্র। হাসপাতালে ঢোকার মুখে পার্কিং জোন তৈরি করা হবে। রোগীর আত্মীয়রা যাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে পারেন করা হবে তার ব্যবস্থা। রোগীদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য চালু করা হবে টেলিফোন পরিষেবাও।
বড়দিনের আগেই শিলিগুড়ি হাসপাতালকে এমনভাবেই সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। বুধবার হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের পর ওই কথাই জানালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আধুনিক মানের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে পরিকাঠামোগত দিক থেকেও শিলিগুড়ি হাসপাতালকে আমরা সাজিয়ে তুলব। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সমস্ত বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। ২৫ ডিসেম্বরের আগেই আমরা হাসপাতালকে অন্য রূপ দিতে পারব।” |
|
নিজস্ব চিত্র |
শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রবাবু বলেন, “সদ্যোজাত শিশুদের জন্য যে বিশেষ ইউনিট গড়া হচ্ছে তার কাজ প্রায় শেষ। তা অতি আধুনিক মানের। আর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যা রোগীদের মানসিক ভাবে অনেকটাই চাঙ্গা করবে।” তাঁরা জানান, ১০ শয্যার ‘সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট’ তৈরির কাজ প্রায় শেষ। প্রয়োজনীয় সমস্ত যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের জন্য ১৬ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স প্রয়োজন। এর মধ্যে ৮ জন নার্স রয়েছেন। বাকি ৮ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে একটি আধুনিক মানের অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালকে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও একটি জেরস্ক মেশিন, ১০টি কমপিউটর, একটি ফ্যাক্স দেওয়া হবে। শিলিগুড়ির বিধায়ক কোটা থেকেও একটি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হবে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে টেলিফোন পরিষেবার ব্যবস্থাও করা হবে। জরুরি বিভাগে শয্যার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে গুরুতর অবস্থায় যাওয়া রোগীদের চিকিৎসায় সুবিধে হয়। প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে আনা হচ্ছে অপারেশনের টেবিল। এ ছাড়াও সিটি স্ক্যান বসানো হবে। বার্ন ইউনিট চালু করা হবে। বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক যাতে হাসপাতালে থাকে সে ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোগীর আত্মীয়রা যাতে বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন সে ব্যাপারে ব্যবস্থা করা হবে। রোগী কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মীদের জন্য নতুন আবাসন তৈরির কাজ শুরু করা হবে। সেটা সম্পূর্ণ হলে পুরনো আবাসন ভেঙে নতুন ভাবে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন গড়ে তোলা হবে। রোগীদের বসার জন্য শেড তৈরি হবে। আবার চিকিৎসকদের বসার ঘর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘পার্কিং জোনে’ সরকারি গাড়ি ‘স্টিকার’ লাগিয়ে রাখা হবে। বাইরের গাড়ি রাখার ব্যবস্থাও থাকবে সেক্ষেত্রে একটি ‘ফি’ নেওয়া হবে। হাসপাতাল ক্যান্টিন পরিষেবা চালু করা হবে। হাসপাতালে নতুন আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রী জানান, শিলিগুড়ি যে জেলা হাসপাতাল তা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য দফতরে নথিভুক্ত হয়নি। এবারে রাজ্য সরকারের তরফে সে ব্যপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধে পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, “প্রত্যেক মাসে রোগী কল্যাণ সমিতির একটি করে বৈঠক হবে। মাসে একটি রিপোর্ট রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হবে। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক হাসপাতালের সমস্ত কাজে নজরদারি করবেন।” বৈঠকে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক, শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সৌরভ পাহাড়ি উপস্থিত ছিলেন। |
|
|
|
|
|