|
|
|
|
রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আশঙ্কা |
এমসিআই-কে এড়িয়ে রাজ্যই নেবে মেডিক্যালের জয়েন্ট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) তাদের দাবি না মানায় ২০১২-১৩ সালে মেডিক্যালের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা নেবে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। বুধবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বৈঠকে এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এতে সমস্যা বাড়ল না কমল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আগামী বছর থেকে মেডিক্যালে দেশ জুড়ে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল এমসিআই। ওই নির্দেশ মতো প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইংরেজি ও হিন্দিতে হওয়ার কথা। মূলত সিবিএসই পাঠক্রমের ভিত্তিতে ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ তাতে আপত্তি জানায়। ইংরেজি ও হিন্দির পাশাপাশি বাংলাতেও পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানায় তারা। কিন্তু এমসিআই সেই দাবি না মানায় পশ্চিমবঙ্গ নিজেদের পথেই চলার সিদ্ধান্ত নিল। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত এ দিন বলেন, “সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরাই আমাদের মতো করে পরীক্ষা নেব।” এ রাজ্যে মেডিক্যালে মোট আসন ১৬০০। প্রতি বছর প্রায় ৪৫ হাজার ছেলেমেয়ে মেডিক্যালের জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দেন।
কিন্তু রাজ্য সরকারের এ দিনের সিদ্ধান্তে সমস্যা মিটল, নাকি আরও ঘোরালো হল সেই প্রশ্ন থাকছেই। কারণ এমসিআই জানিয়ে দিয়েছে, অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা ছাড়া অন্য কোনও ভাবে মেডিক্যালে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের তারা অনুমোদন দেবে না। অর্থাৎ এ রাজ্য থেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের কিন্তু রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাওয়া নিয়ে সমস্যা হবে। এমসিআই-এর মুখপাত্র অশোক গুপ্ত এ দিন বলেন, “অভিন্ন প্রবেশিকা দিতেই হবে। এই পরীক্ষায় না বসলে পরবর্তী কালে ডাক্তারি পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন দেবে না এমসিআই।”
তা হলে আগামী বছর যাঁরা রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাবেন, তাঁদের সমস্যা কি আরও বাড়ল না? রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের নেওয়া জয়েন্টে বসলে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা হবে না, এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”
অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে এমসিআইয়ের শর্তে পশ্চিমবঙ্গের মতো আপত্তি করেছিল তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রও। তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। আদালত থেকে তারা স্থগিতাদেশ পেয়েছে। রাজ্য জয়েন্ট্র এন্ট্রান্স সিলেকশন কমিটি (মেডিক্যাল)-র চেয়ারম্যান উৎপল দত্ত বলছেন, “চার-চারটি রাজ্যের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সাহস এমসিআই পাবে না। প্রয়োজনে চার রাজ্য একসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে।”
কিন্তু ঘটনা হল, অন্য তিন রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ এখনও যোগাযোগই করে উঠতে পারেনি। নিজেদের মধ্যে এক বারের জন্যও কথা বলেনি তারা। অন্য তিন রাজ্য ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টগুলিতে আবেদন করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গ সেটাও করেনি। তাই অন্য তিন রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের পিছনে এসে কতটা দাঁড়াবে, সেই আশঙ্কা রয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারদেরই। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গও বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাওয়ার কথাই ভেবেছিল। কিন্তু পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে তারা পিছিয়ে যায়। কেন রাজ্য সরকার আদালতে গেল না, সেই প্রশ্নের কোনও ব্যাখ্যা রাজ্যের স্বাস্থ্য-কর্তাদের কাছে নেই।
এর আগে পিটিটিআই-এর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংস্থার নির্দেশ না মানায় রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা ভুগেছেন। সেই জট এখনও কাটেনি। তাই সুশান্তবাবুর আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের একাংশ। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা কীসের ভিত্তিতে এমন আশ্বাস দিলেন? সুশান্তবাবু বলেন, “এটি রাজ্য সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। কোনও না কোনও পথ বেরোবেই। সোমবারই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।” |
|
|
|
|
|