|
|
|
|
হাতির হানার ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর আন্দোলনে কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বুনো হাতির হামলায় নষ্ট ফসলের ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নামল কংগ্রেস। বুধবার বাগডোগরা অঞ্চল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বনমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা একটি স্মারকলিপি স্থানীয় রেঞ্জ অফিসারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রায় দু’দশক আগে বন দফতরের সমীক্ষায় বিঘা প্রতি ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়। এখনও সেটা চলছে। অথচ ধান চাষের বিঘা প্রতি খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩-৪ হাজার টাকা। বাগডোগরা অঞ্চল কংগ্রেসের সভাপতি অমিতাভ সরকার বলেন, “আগে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। এখন আমাদের জোট সরকার। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকদের প্রতি এই অবিচার আর চলবে না। সেই জন্যই বিষয়টি নিয়ে বনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।” বর্তমান বাজার দরের তুলনায় বন দফতরের দেওয়া ক্ষতিপূরণ যে যৎসামান্য, সে কথা স্বীকার করছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনও। তাঁর যুক্তি, বুনো হাতির হামলায় ফসলের ক্ষতি হলে দফতরের পরিকল্পনা বহির্ভুত খাত থেকে টাকা দেওয়া হয়। সেই কারণে ক্ষতিপূরণের টাকা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। বনমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি। তবে ক্ষতিপূরণের জন্য বাজেট বরাদ্দ না-থাকায় সমস্যা হয়। বরাদ্দ না-থাকায় গত আর্থিক বছরের ক্ষতিপূরণই তো বিলি করা যায়নি। তবে এই সমস্যার সমাধানের রাস্তা আগামী বাজেটে খুঁজে বার করার চেষ্টা হবে।” বুনো হাতির হামলায় ফসলের ক্ষতি এবং তার ক্ষতিপূরণ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই তরাইয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। প্রতি বছর পুজোর পরেই বুনো হাতির পাল তরাইয়ের বিভিন্ন জঙ্গলে জমা হয়। সন্ধ্যা নামলেই হাতির পাল নেমে পড়ে ধান খাতে। প্রায় একশো থেকে দেড়শো হাতি ধান খেত থেকে তাড়াতে গেলে সেগুলি বনাঞ্চল লাগোয়া গ্রামে ঢুকে পড়ে। সে ক্ষেত্রে প্রাণহানির সম্ভাবনা থেকে যায় বলে বনকর্মীরা হাতির পাল ধান খেত থেকে সরাতে গিয়ে হিমসিম খান। চলতি মাসেই বাগডোগরা ও নকশালবাড়ি এলাকায় প্রায় দেড়শো হাতি জমা হয়। ১১ থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত হাতির পাল গোটা তরাই জুড়ে কয়েক হাজার বিঘে জমির ধান নষ্ট করে। বাগডোগরার তারাবাড়ি, ধেমালের ছাট, নয়াবস্তি, চৌপুখুরিয়া, কেষ্টপুর এলাকায় বিপাকে পড়েন কয়েকশো চাষি। নকশালবাড়ির মণিরাম, হাতিঘিষা, উত্তমের ছাট এলাকাতেও বহু ফসল নষ্ট হয়। কেষ্টপুরের বাসিন্দা নির্মল ঘোষ বলেন, “একশো হাতি জমি ধান খেতে নামে তাহলে স্রেফ পায়ের চাপেই তো সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যায়। সারা বছর পরিবার নিয়ে বাঁব কী করে?” বন দফতরের বাগডোগরার রেঞ্জ অফিসার বিজন তালুকদার বলেন, “নভেম্বর মাসে বুনো হাতির হামলায় ফসল নষ্ট হওয়ায় বহু কৃষক যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এ বার যে কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি সে কথাও মাথায় রাখতে হবে। কংগ্রেসের স্মারকলিপি ডিএফওর মাধ্যমে বনমন্ত্রী কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” স্মারকলিপিতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে হাতির হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি তৈরির জন্য ২০ হাজার টাকা এবং প্রাণহানির ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ এক লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই দুটি প্রস্তাব নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলেছেন বলে জানিয়েছেন বনমন্ত্রী। |
|
|
|
|
|