|
|
|
|
মোবাইলে কথা রেকর্ড করে বিতর্কে নুরুল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
পুর চেয়ারম্যান নান্টু পালের সঙ্গে মোবাইল টেলিফোনে কথাবার্তার সময়ে তা ‘রেকর্ড’ করে বিতর্কে জড়ালেন শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম। বুধবার পুরভবনের মাসিক অধিবেশনে একটি প্রস্তাব পেশ করতে বাধা পেয়ে আচমকা সিপিএম নেতা মুন্সি নুরুল ইসলামকে চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে উত্তেজিতভাবে বলতে শোনা যায়, “ওই প্রস্তাব পেশ করার ব্যাপারে আপনি আমাকে ফোন করেছিলেন। বিষয়টি পেশ করা যাবে না বলে জানিয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। আমরা বিরোধী দল। বিধি মেনে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব। মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে যাব কেন? আপনার সে সব কথা আমার মোবাইলে রেকর্ড করা রয়েছে।” বিরোদী দলনেতা ওই দাবি করার পরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। কংগ্রেস-তৃণমূলের একাধিক কাউন্সিলর কথাবার্তার সময়ে তা রেকর্ড করা অসৌজন্যমূলক বলে হইচই শুরু করেন। পুরসভার মেয়র পারিষদ (পূর্ত) কৃষ্ণ পাল জানান, পুরসভার ইতিহাসে এমন ঘটনা নজিরবিহীন। এমনকী, বামেদের তরফেও বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কারণ, নান্টুবাবু দীর্ঘদিন সিপিএম কাউন্সিলর হিসেবেই বরো চেয়ারম্যান ছিলেন। ঘটনাচক্রে তিনি সিপিএমে একসময়ে নুরুলবাবুর অনুগামী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। পুরভবনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন কাউন্সিলরকে বলতে শোনা যায়, “আমরা অনেকেই টেলিফোন কথাবার্তার সময়ে ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখের কথা বিনিময় করি। সে সব কথা সকলে রেকর্ড করতে শুরু করলে তো টেলিফোনে কথা বলাই আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।” বিরোধী দলনেতার আচরণে ব্যথিত পুর চেয়ারম্যান নান্টুবাবুও। তিনি বলেন, “উনি রেল ও সেনাবাহিনীর জমিতে বসবাসকারীদের পাট্টা বিলি করতে হবে, এই মর্মে প্রস্তাব পেশ করতে চান। আমি জানিয়ে দিই, গরিবদের পক্ষে আমরা সবসময় রয়েছি। কিন্তু, ওই সব জমি কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় রয়েছে। কাজেই তা নিয়ে আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবুও প্রয়োজনে মেয়রের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওঁকে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু, একজন বয়োডৈষ্ঠ রাজনীতিক হয়ে উনি যে আমার কথাবার্তা রেকর্ড করবেন, এতটা অসৌজন্যমূলক আচরণ আশা করিনি।” ঘটনার সমালোচনা করেছেন পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তও। মেয়র বলেছেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এমন কথাবার্তা রেকর্ড করার প্রবণতা বাড়লে তো ব্যক্তিগত সম্পর্ক বলে কিছু থাকবে না। এতটা অসৌজন্যমূলক আচরণ বিরোধী দলনেতা না-করলেই পারতেন।” বস্তুত, মোবাইলে কথাবার্তার সময়ে তা চুপিসাড়ে রেকর্ড করার বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলনেতা সভার মধ্যে হইচই করায় সিপিএম ও তার শরিক দলের নেতাদের অনেকেই বিস্মিত। সিপিআইয়ের একজন প্রাক্তন কাউন্সিলর জানান, অন্যত্র যাই-ই হোক না কেন, শিলিগুড়িতে রাজনীতির বাইরে যুযুধান দলের নেতাদের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। সেখানে একজন নেতা আরেকজন প্রাক্তন দলীয় সতীর্থের সঙ্গে কথাবার্তার সময়ে তা গোপনে রেকর্ড করে রাখলে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। সিপিএমের একজন প্রবীণ নেতা জানান, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন। আরএসপি ও ফরওয়ার্ড ব্লকের অনেক প্রবীণ নেতাই ওই ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করে জানান, তাঁরাও বামফ্রন্টের বৈঠকে বিষয়টি জানতে চাইবেন। এদিন অবশ্য প্রস্তাব পেশ করতে না-পেরে মাসিক সভা থেকে ওয়াক আউট করেন বিরোধী বামেরা। |
|
|
|
|
|