নিজের নাট্যকর্মীর নাম সুপারিশ ব্রাত্যর
আট ক্লাস পড়েই সংসদ-সভাপতির সিএ
চিঠিপত্র পড়ে গুরুত্ব অনুযায়ী সেগুলির প্রতি সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা তাঁর কাজ। দরকারি ফাইলের খোঁজখবর রাখাও তাঁরই কাজ। এই ধরনের আরও অনেক জরুরি কাজের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে সম্প্রতি যাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? অষ্টম শ্রেণি পাশ।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির নতুন সিএ বা আপ্ত-সহায়কের নিয়োগ নিয়ে তাই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিতর্ক যে জোরদার হয়ে উঠেছে, তার কারণ, ওই আপ্ত-সহায়ক নিযুক্ত হয়েছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সুপারিশে। এবং ওই ব্যক্তি তাঁরই নাটকের দলের কর্মী।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে সভাপতির ব্যক্তিগত সহায়ক না-থাকায় আপ্ত-সহায়কের পদটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সংসদের নিয়মে এই পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্দিষ্ট করে দেওয়া নেই। সভাপতি তাঁর পছন্দমতো ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে পারেন। তবে যে-হেতু শিক্ষা নিয়ন্ত্রক একটি সংস্থায় সভাপতির সহায়তা করতে হয়, তাই ওই পদে মোটামুটি শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন আছে বলে সংসদের আধিকারিকদের একাংশের অভিমত। ইতিপূর্বে ওই পদে যিনি ছিলেন, তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী।
সভাপতির নতুন আপ্ত-সহায়ক রঞ্জন দত্ত নিজের জীবনপঞ্জিতে জানিয়েছেন, তিনি নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ। যদিও শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে রঞ্জনবাবু যে-শংসাপত্র দাখিল করেছেন, তাতে লেখা রয়েছে, তিনি অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা পাশ করে নবম শ্রেণিতে উঠেছেন।
তা হলে দশ হাজার টাকা বেতনে অষ্টম শ্রেণি পাশ এক যুবককে এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হল কেন?
এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি সংসদ-সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায়। তবে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা আপ্ত-সহায়কের পদে থাকা ব্যক্তিকে সরানোর নির্দেশ পাঠান সংসদ-কর্তৃপক্ষের কাছে। তার পরে বিকাশ ভবন থেকেই আপ্ত-সহায়ক হিসেবে রঞ্জনবাবুর নাম জানানো হয়। এই নিয়ে সংসদ-কর্তৃপক্ষের কাছে অবশ্য কোনও রকম লিখিত নির্দেশ পাঠানো হয়নি।
রঞ্জনবাবু শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবাবুর নাটকের দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় অভিযোগ উঠেছে, যোগ্যতা না-থাকলেও ওই যুবককে শিক্ষামন্ত্রীই সংসদ-সভাপতির আপ্ত-সহায়ক করার সুপারিশ করেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেননি ব্রাত্যবাবু। তিনি বলেন, “আপ্ত-সহায়ক পদের জন্য কারও নাম সুপারিশ করতে সভাপতি আমাকে অনুরোধ করেন। তাই ওই যুবকের নাম সুপারিশ করি। শিক্ষাগত যোগ্যতা ওই পদের জন্য বিবেচ্য নয়। এই আপ্ত-সহায়কের জন্য সরকারি কোনও নিয়মবিধিও নেই।” সেই সঙ্গেই ব্রাত্যবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, “যত দিন আমার কাছে এই ধরনের অনুরোধ আসবে, আমি প্রথম বিবেচনায় থিয়েটারের লোকেদেরই নাম সুপারিশ করব।” এই ঘটনায় সংসদের কর্মচারী-আধিকারিকদের একাংশ ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত। সংসদের এক প্রবীণ আধিকারিক বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে কারও প্রতি বিদ্বেষ নেই আমাদের। কিন্তু সভাপতির আপ্ত-সহায়ক যদি স্নাতকও না-হন, তা হলে তো সমস্যা। কারণ, সংসদের নিজস্ব কাজ তো রয়েছেই। তা ছাড়া বাইরে থেকে যে-সব ফোন এবং চিঠিপত্র সভাপতির কাছে আসে, সেগুলিও দেখতে হয় আপ্ত-সহায়ককেই।” সংসদের এক প্রাক্তন সভাপতিও মনে করেন, আপ্ত-সহায়কের প্রথাগত শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। কেবল মানবিকতার খাতিরে কাউকে ওই পদে নিয়োগ করলে সভাপতিরই সমস্যা হতে পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.