কর্মীদের ‘সুবিধাবাদ’ নির্বাচনে ডুবিয়েছে দলকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
ঠিকাদারি, জমির দালালি থেকে ‘বিবিধ নীতিহীন’ কাজে দলীয় কর্মীদের জড়িয়ে পড়ায় সাধারনের মধ্যে সিপিএম সম্পর্কে ‘বিরূপ’ মনোভাব তৈরির যে জমি তৈরি হয়েছিল, গত বিধানসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফল তারই স্পষ্ট প্রমাণ।
এ নিয়ে দলের জোনাল কিংবা লোকাল কমিটির বৈঠকে ‘আত্মসমালোচনা’ নতুন নয়। জনমানসে সেই সব দলীয় কর্মীদের হারানো ‘গ্রহণযোগ্যতা’ ফেরাতে এ বার জোর দিচ্ছে সিপিএম। রঘুনাথগঞ্জে মঙ্গলবার দলের নবম জোনাল সম্মেলনে প্রকাশিত খসড়া প্রতিবেদনে এমনই মন্তব্য করা হয়েছে।
খসড়া প্রতিবেদনে সমালোচনা করা হয়েছে দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের ‘স্বজনপোষণ’-কেও। পাশাপাশি পরিবর্তিত পরিস্থিততিতে দলীয় কর্মীদের মধ্যে হতাশাও যে প্রবল, স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তা-ও। খসড়ায় স্পষ্টই উল্লেখ করা হয়েছে, দলে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘দ্বিধা’ রয়েছে। এমনকী নানা অজুহাতে কর্মীরা ‘নিষ্ক্রীয়’ হয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। খসড়ায় স্পষ্টই উল্লেখ করা হয়েছে, নিজেদের আর্থিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে ‘দলকে জীবীকার আধার বলে মনে করছেন অনেকে।’ ওই সব কর্মীদের জন্যই দল মানুষের কাছে ‘গ্রহণযোগ্যতা’ হারাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় জেলাপরিষদ হলে আয়োজিত ওই সম্মেলনে জোনাল সদস্য সংখ্যা ২২ থেকে কমিয়ে ১৬ করা হয়েছে। ওই দিন জোনাল সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন দিব্যচয়ন শুকুল। তিনিও স্পষ্ট বলছেন, “বাস্তব অবস্থা স্বীকার করেই ওই খসড়া প্রতিবেদন লেখা হয়েছে। ৭৯ জনের দলীয় সদস্যপদ নবীকরণ করা হয়নি। ১৯ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ সবই শুদ্ধিকরণের অঙ্গ। কিছু দলীয় নেতার সুবিধাবাদী ভূমিকা দলের ক্ষতি করেছে। মানুষ তা ভালভাবে নেননি। এই সম্মেলনে তাই দলীয় কর্মীদের সকলকেই সতর্ক করা হয়েছে।”
কর্মীরা যে পারস্পারিক ‘বিশ্বাস’-ও হারিয়েছেন, খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে তা-ও। যেমন স্পষ্টই উল্লেখ রয়েছে, কর্মীদের মধ্যে ‘চাওয়া-পাওয়ার সম্পর্কটিই’ প্রধান হয়ে উঠছে। না পেলেই ক্ষোভ। আর তা থেকেই বাড়ছে ‘নিষ্কীয়তা।’ নির্বাচনেও সেই সব কর্মীদের নিষ্ক্রীয়তা যে দলের ক্ষতি করেছে তাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বর দলের জেলা সম্মেলন বসছে বহরমপুরে। সেখানেও এমনই আত্মসমালোচনার সুরেই যে দল হাঁটবে দলীয় সূত্রেই তা জানা গিয়েছে। |