ইম্ফলে আই লিগ খেলতে গিয়ে ব্যারেটো-ওডাফারা হোটেলবন্দি!
বুধবার সকালে জঙ্গিদের বিস্ফোরণ ঘটানোর জেরে ইম্ফলে মোহনবাগান হোটেলের চারপাশে চলছে সেনা টহল। এ কে ৪৭, ইনসাস, এস এল আর-সহ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জওয়ানরা। এমনকী সুব্রত ভট্টাচার্যদের হোটেলের মধ্যেও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তা শুনশান। কার্ফু শিথিল হচ্ছে মাঝেসাজে। সেই সময়টুকু লোকে বেরিয়ে খাবার, জিনিসপত্র কিনে দ্রুত ঢুকে পড়ছে বাড়িতে। একটি জঙ্গি সংগঠনের ডাকা ৭২ ঘণ্টার বন্ধও চলছে রাজ্য জুড়ে। খাওয়ার জলের তীব্র অভাব। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম বুধবার রাতে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করেছেন গোটা মণিপুরে।
এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে এ দিন সেনা কনভয় উপযুক্ত নিরাপত্তা দিয়ে মোহনবাগান দলকে হোটেলে পৌঁছে দিলেও দুপুর থেকে বন্দি পুরো সবুজ-মেরুন টিম। ইম্ফল থেকে ফোনে মোহন-টিডি সুব্রত বললেন, “অদ্ভুত পরিস্থিতি। বাইরে বেরনো যাচ্ছে না। রাস্তায় কোনও লোকজন নেই। তা সত্ত্বেও বলছে তো শুক্রবার আমাদের সঙ্গে লাজংয়ের ম্যাচটা হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুশীলন করার জন্যও স্টেডিয়াম যাওয়ার কথাও আছে আমাদের।” জানা গেল, বিস্ফোরণ স্থলের কাছেই খুমন লামপাক স্টেডিয়াম। সেখানে সেনাবাহিনীর ঘেরাটোপের মধ্যেই অনুশীলন হবে ব্যারেটোদের। |
যে দিন ম্যাচ তার পর দিনই আবার মণিপুরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ফলে যত সমস্যাই থাকুক, পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক তা প্রমাণ করতে মরিয়া রাজ্য প্রশাসন। ইম্ফলে আই লিগের ম্যাচ সংগঠকরা সেটা জানিয়েওছেন ফেডারেশনকে। ব্যারেটোরা সব দেখেশুনে যতই টেনশনে থাকুন না কেন, তাঁদের ম্যাচ খেলতে হবে ধরেই নেওয়া হচ্ছে। আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর পরিস্থিতি আন্দাজ করে নিজেই যাচ্ছেন ইম্ফল। দিল্লিতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন, “মণিপুর ফুটবল ফেডারেশন থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়া হবে ম্যাচের সময়। তা সত্ত্বেও যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে জন্য আমি নিজেও যাচ্ছি।”
বুধবার সকালে হাপ্তা কাঞ্জাবুঙ্গ বাজারের যে জনবহুল এলাকায় জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটায়, মোহনবাগান হোটেল থেকে সেই জায়গাটা চার কিলোমিটারের মধ্যে। সেখানে পর্যটন মেলা উপলক্ষে এসেছিলেন বহু বিদেশি। বিস্ফোরণে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত দু’জন মহিলা। ইম্ফলে সকাল এগারোটা নাগাদ যখন বিস্ফোরণ ঘটছে, তখন কিংশুক, অসীমরা সেখানকারই বিমান ধরতে উঠছেন। দলের সঙ্গে থাকা অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “আমরা প্লেনে ওঠার সময়ই শুনেছিলাম বিস্ফোরণের খবর। ইম্ফল এয়ারপোর্ট থেকে সেনা কনভয় আমাদের হোটেলে পৌঁছে দিয়েছে। কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখানে খাওয়ার জলের খুব অভাব। হোটেলে জলের দাম আকাশছোঁয়া। বাইরে বেরনো যাচ্ছে না। পরিস্থিতি রীতিমতো থমথমে। ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। ওরা বলেছে ম্যাচ নির্দিষ্ট সময়েই হবে।” |