অশোক দিন্দার আগুনে গতি দিয়ে শুরু হওয়া দিনের শেষটাও হল গরমাগরম। গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এবং ম্যাচে ফিরে এল বাংলা।
রোহতাকে দ্বিতীয় দিনের প্রথম আধ ঘণ্টার মধ্যে দুটো উইকেট তুলে শুরুটা করেছিলেন অশোক দিন্দা। শুরু মানে, প্রথম দিনের বোলিং ব্যর্থতা থেকে দলকে টেনে তোলার ‘শুভারম্ভ’। দিনের শেষে বাংলাকে আরও চাঙ্গা করে তুললেন সৌরভ। ব্যাটসম্যান সৌরভ নয়, আগ্রাসী নেতা সৌরভ। স্টিভ ওয়-কে টসের জন্য অপেক্ষা করিয়ে রাখা প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর সেই ‘জোশ’ এখনও কমেনি। বাংলার বিতর্কিত দুটো এলবিডব্লিউ নিয়ে ম্যাচ রেফারির কাছে সটান অভিযোগ জানিয়ে এলেন বাংলা অধিনায়ক। |
৩৫৮ রানের মধ্যে হরিয়ানার ইনিংস শেষ করে দিয়ে ব্যাট করতে নেমে ভাল ছন্দে ছিলেন বাংলার দুই ওপেনার রোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরিন্দম দাস। প্রথম কয়েকটা ওভার পেসারদের দিয়ে বল করিয়ে নিজে হাত ঘোরাতে আসেন হরিয়ানা অধিনায়ক অমিত মিশ্র। তুলে নেন রোহন এবং তিন নম্বরে নামা অভিষেক ঝুনঝুনওয়ালার উইকেট। এই দুটো আউটকে ঘিরেই তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বাংলা শিবিরে। তাঁদের দাবি, রোহন এবং অভিষেক দু’জনকেই ভুল আউট দেওয়া হয়েছে। রোহনকে করা অমিতের বলটা স্টাম্পে লাগত না। তা ছাড়া তিনি অনেকটা পা বাড়িয়ে খেলেছিলেন। অভিষেকের এলবিডব্লিউ আরও বিতর্কিত। বাংলা শিবিরের দাবি, পরিষ্কার ব্যাট-প্যাড হয়েছিল। অভিষেকের ব্যাটের আওয়াজ নাকি বাইরে থেকেও শোনা গিয়েছে।
অভিষেকের উইকেট পড়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে মাঠেই ম্যাচ রেফারির সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান সৌরভ। অভিযোগ করেন, বাংলাকে দুটো বাজে আউট দেওয়া হয়েছে। অথচ দিন্দার বলে রাহুল দেওয়ানের পরিষ্কার এলবিডব্লিউ আউট দেওয়া হয়নি। বাংলা শিবিরের দাবি, রোহন এবং অভিষেক দু’জনকেই বেশ জমাট দেখাচ্ছিল। দিনের শেষে বাংলার স্কোর মোটেও ১১৩-২ হওয়ার কথা নয়। সন্ধের দিকে ঘটনার জের আছড়ে পড়ে সিএবি-তেও। ম্যাচের শেষে বোর্ডকে লিখিত অভিযোগ জানানোর কথা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
দুটো আউটের বিতর্ক বাদ দিলে অবশ্য দিনটা বাংলার পক্ষে বেশ ভাল গেল। বুধবার শুরু থেকেই দিন্দার সঙ্গে ভাল বল করছিলেন অন্য দুই পেসার রণদেব বসু এবং সামি আহমেদ। রণ এ দিন উইকেট না পেলেও সুইং দিয়ে বারবার নাজেহাল করেছেন বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। প্রথম দিনের তুলনায় বুধবার অনেকটাই পুরনো ছন্দে ছিলেন। উইকেট পাননি তো কী, ২৬ ওভার বল করে আটটা মেডেন এবং ২.৫৩ গড়ে দেওয়া ৬৬ রানের গুরুত্বও কম না। নাগাড়ে ভাল লাইন-লেংথে বল করার পুরস্কার হিসেবে দিন্দা পেলেন পাঁচ উইকেট।
রণ-দিন্দারা পরীক্ষায় আপাতত উতরে গিয়েছেন। এ বার অমিত মিশ্রকে সামলে বাংলার ব্যাটসম্যানরা রিপোর্ট কার্ডে কত নম্বর তুলতে পারেন, তার উপর নির্ভর করছে এই ম্যাচে বাংলার ভাগ্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
হরিয়ানা ৩৫৮ অল আউট (রাহুল দেওয়ান ১১৫, সানি সিংহ ১১১, অশোক দিন্দা ৫-৯৮, ইরেশ সাক্সেনা ৩-৭৮, রণদেব বসু ০-৬৬)।
বাংলা ১১৩-২ (অরিন্দম দাস ৭০ ব্যাটিং, অমিত মিশ্র ২-১৬)। |