ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না মেলায় সমস্যায় পরিবার
হাসপাতালে কর্মসংস্কৃতির হাল ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন। কিন্তু তাতেও মানুষের হয়রানি কমেনি। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেতে যেখানে সময় লাগে মাত্র পনেরো দিন, সেখানে এক বছর কেটে গেলেও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাননি মৃতের আত্মীয়েরা।
এই পরিস্থিতি উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের। নিয়ম হল, দেহের ময়না-তদন্ত করার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক রিপোর্টও লিখে দেবেন। কিন্তু হাওড়ার আমতার দেবান্দি গ্রামের বাসিন্দা দেবানন্দ করাতির ক্ষেত্রে এটা হয়নি। তাঁর দেহের ময়না-তদন্ত করেছিলেন যে চিকিৎসক, তিনি সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট লেখেননি। ময়না-তদন্ত করার কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি বদলি হয়ে যান অন্য হাসপাতালে। ফলে এখনও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাননি দেবানন্দবাবুর স্ত্রী ছন্দাদেবী।
এ দিকে, রিপোর্ট না-মেলায় পঞ্চায়েত থেকে স্বামীর মৃত্যু-সংক্রান্ত শংসাপত্র পাননি ছন্দাদেবী। স্বামীর বিমা-সংক্রান্ত টাকাও আটকে গিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং হাওড়ার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ময়না-তদন্তের রিপোর্টের জন্য বার বার আবেদন করেও ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান ছন্দাদেবী।
স্থানীয় ডাকঘরে পোস্ট মাস্টারের চাকরি করতেন দেবানন্দবাবু। গত ২০ জানুয়ারি তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পরের দিনই উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে তাঁর দেহের ময়না-ময়না তদন্ত হয়। সংশ্লিষ্ট সব রকম কাগজপত্রও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নিয়মানুযায়ী ময়না-তদন্ত হয়ে যাওয়ার পরে হাসপাতাল থেকে রিপোর্টটি পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট থানায়। সেখান থেকে মৃতের আত্মীয়েরা তা সংগ্রহ করতে পারেন। সব মিলিয়ে সময় লাগার কথা দিন পনেরো। ছন্দাদেবীর অভিযোগ, তিনি থানায় গেলে তাঁকে বলা হয়, উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট আসেনি। অন্য দিকে, মহকুমা হাসপাতালে গেলেও তাঁদের বার বার ঘোরানো হচ্ছে। ছন্দাদেবী বলেন, “স্বামী মারা গিয়েছেন প্রায় এক বছর হল। ওঁর জায়গায় আমার মেয়ে একটা চাকরি পেতে পারে। কিন্তু স্বামীর ময়না তদন্তের রিপোর্টটি না-পাওয়ায় সে ক্ষেত্রেও অসুবিধা হচ্ছে।”
ছন্দাদেবীর দেওর প্রেমানন্দ করাতি এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা দীপঙ্কর দাস বলেন, “আমরা হাসপাতালে গেলে বলা হচ্ছে যে চিকিৎসক ময়না-তদন্ত করেছিলেন তিনি বদলি হয়ে গিয়েছেন। রিপোর্টটি তিনি লিখে রেখে যাননি। ফলে এটা দেওয়া যাচ্ছে না।” প্রেমানন্দবাবু এবং দীপঙ্করবাবুদের অভিযোগ, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছিলেন ওই চিকিৎসককে ডাকিয়ে এনে রিপোর্ট লেখানো হবে। কিন্তু সেটাও করা হয়নি।”
উলুবেড়িয়া হাসপাতালের সুপার গৌরাঙ্গসুন্দর জানা বলেন, “ওই চিকিৎসক আরও অনেক দেহের ময়না-তদন্ত করেছেন। তাঁদের আত্মীয়েরাও রিপোর্ট পাননি। তাঁকে ডেকে এনে রিপোর্ট লেখানোর ক্ষমতা আর আমাদের হাতে নেই। এটা করতে পারেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।” প্রেমানন্দবাবুর দাবি, তিনি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে সব কিছু জানিয়েও ফল না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিতে বাধ্য হয়েছি।”
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বাতী দত্ত অবশ্য বলেন, “দেবানন্দবাবুর আত্মীয়দের কাছ থেকে কোনও আবেদনপত্র আমি পাইনি। তবে তাঁরা আমার কাছে এলে আমি ওই চিকিৎসককে ডাকিয়ে এনে রিপোর্ট যাতে পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.