নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সিঙ্গুরে বসছে তাপসী মালিকের মূর্তি। আগামী ১৮ ডিসেম্বর তাপসীর মৃত্যুদিনে ওই মূর্তি বসবে বলে বুধবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিঙ্গুরে তাপসীর মূর্তি বসানোর পর সেখানে সিঙ্গুরের বাসিন্দা রাজকুমার ভুলেরও মূর্তি বসানো হবে। তাপসী-কাণ্ডের আগে সিঙ্গুরেই ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু হয়েছিল রাজকুমার ভুলের। তদানীন্তন সরকার বিষয়টিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে বর্ণনা করলেও মমতা বরাবরই অভিযোগ করেছেন, টাটা-বিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার জন্য ‘পুলিশি অত্যাচারে’ রাজকুমারের মৃত্যু হয়েছিল।
সিঙ্গুরের কৃষিজমি ফিরে পাওয়ার দাবিতে মমতা যখন ধর্মতলায় অনশন করছিলেন, তখনই টাটাদের কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমিতে পাওয়া যায় তাপসীর অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ। তাপসী সিঙ্গুরের ‘কৃষিজমি বাঁচাও’ আন্দোলনে ‘সক্রিয়’ ভাবে জড়িত ছিলেন। সেই কারণেই তাঁকে ভোরবেলায় ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগে গ্রেফতার হন সিপিএমের সিঙ্গুর জোনাল কমিটির সম্পাদক সুহৃদ দত্ত এবং এলাকার সিপিএম নেতা দেবু মালিক। দু’জনেই নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন। পরে তাঁরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। রাজকুমারের স্মৃতিতে সেখানে তাঁরও একটি মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।ঘটনাচক্রে, সিঙ্গুর আন্দোলনের ফলে পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিধানসভা ভোট পর্যন্ত টানা তিন বছর সমস্ত নির্বাচনে সেখানে জেতে তৃণমূল। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন মমতা তাপসীর পরিবারের ‘দায়িত্ব’ নিয়েছিলেন। বহুবার তিনি নিজে তাপসীদের বাড়িতেও গিয়েছেন। যেমন গিয়েছেন রাজকুমারের বাড়িতেও। তাঁর পরিবারকেও দলের তরফে বরাবর সাহায্য করেছেন মমতা। রাজ্যে বাম-জমানার অবসান ঘটাতে পারার পিছনে সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামের ‘অবদান’ বরাবরই স্বীকার করেন মমতা। এবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি তাপসী-রাজকুমারকে আরও ‘স্বীকৃতি’ দিতে উদ্যোগী হলেন। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন, যুব কল্যাণমন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসকে মূর্তি বসানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। |