সম্পাদকীয় ২...
সংখ্যালঘুর কল্যাণচিন্তা
কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়নের কর্মসূচিকে আরও কার্যকর ও অর্থবহ করিয়া তোলার ভাবনা চলিতেছে। সাচার কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে দেশের সংখ্যালঘুপ্রধান ৯০টি জেলায় এই কর্মসূচি রূপায়ণের বন্দোবস্ত হইয়াছিল। কিন্তু দেখা গিয়াছে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলি অধিকাংশই মিশ্র এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় যাঁহাদের দুরবস্থা সর্বাধিক, তেমন অনেকেই প্রকল্পের সুবিধা পাইতেছেন না, আবার সংখ্যালঘু নহেন এমন লোকেরাও প্রকল্প হইতে উপকৃত হইতেছেন। ফলে প্রকল্পের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হইতে চলিয়াছে। সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় উপদেষ্টা পর্ষৎ বিষয়টির প্রতি সঙ্গতভাবেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে। উদ্দেশ্য সৎ হইলেও তাহা সিদ্ধ করার পদ্ধতি ঠিক না হইলে যে-সব সমস্যা দেখা দেয়, সংখ্যালঘুর কল্যাণে গৃহীত সরকারি কর্মসূচিগুলির ক্ষেত্রে তাহাই লক্ষ করা যাইতেছে। জাতীয় উপদেষ্টা পর্ষদের সুপারিশ, সরকার ইতিমধ্যেই রূপায়িত প্রকল্পগুলির ব্যাপারে বিস্তারিত তথা সংগ্রহ করুক এবং তাহার ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারিত হউক।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংখ্যালঘুপ্রধান পুর-ওয়ার্ড বা গ্রামকেই প্রাথমিক ইউনিট হিসাবে গণ্য করা দরকার। সংখ্যালঘু উন্নয়নের প্রক্রিয়াটিতেও সংশোধন আনা জরুরি। প্রায়শ দেখা যায়, কেন্দ্রীয় সরকারের যে-সব উন্নয়ন কর্মসূচি আগে হইতেই বহাল সেগুলিকেই সংখ্যালঘুপ্রধান গ্রামে বা পুর-ওয়ার্ডে যান্ত্রিকভাবে সম্প্রসারিত করা হইতেছে। ইহাতে কিন্তু সংখ্যালঘুর বিশেষ অনগ্রসরতা ঘুচাইবার নির্দিষ্ট প্রয়োজন সর্বদা মেটানো যায় না। বিশেষত শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মতো ক্ষেত্রগুলিতে সংখ্যালঘুদের পিছাইয়া পড়ার বাস্তবতাটির প্রতিকার এই যান্ত্রিক উন্নয়নে হইবার নয়। এ জন্য স্বতন্ত্র ভাবনাচিন্তা করা দরকার। উপদেষ্টা পর্ষৎ লক্ষ করিয়াছে, কোনও কোনও রাজ্যে সংখ্যালঘুর প্রতি নির্বাচিত শাসক গোষ্ঠী প্রকাশ্যেই বিরূপ মনোভাব পোষণ করিয়া থাকে। শিক্ষা যৌথ তালিকায় থাকায় ওই সব রাজ্যে সংখ্যালঘুদের অশিক্ষার অন্ধকারে ফেলিয়া রাখার দায়ে কোনও বিবেকদংশন যেমন প্রাদেশিক শাসকদের বিড়ম্বিত করিবে না, তেমনই শাসকরা নির্বাচিত হওয়ায় তাহাদের ইহার অন্যথা করিতে বাধ্যও করা যাইবে না।
সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য ছাত্রাবাস গড়ার দিকেও কেন্দ্রকে নজর দিতে হইবে। শিক্ষান্তে উচ্চতর বা বৃত্তিমূলক শিক্ষার্জন কিংবা চাকুরির অন্বেষণের ক্ষেত্রেও সংখ্যালঘু ছাত্রদের অনগ্রসরতা প্রবল। ইহা দূর করিতে হইলে উচ্চতর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সংবলিত তথ্যের বিপুল ভাণ্ডার সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের নাগালে আনিয়া দেওয়া দরকার। রাজ্য বা কেন্দ্র কী ধরনের সুযোগসুবিধা সংখ্যালঘুদের দিয়া থাকে বা দিতে বাধ্য থাকে, চাকুরির জন্য যোগ্যতামাপক শংসাপত্র কোথা হইতে মিলিতে পারে, কী কী স্থায়ী বা অস্থায়ী চাকুরির জন্য সংখ্যালঘুরা আবেদন করিতে পারে, এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানাইবার জন্য শহরে ও গ্রামে সহায়ক কেন্দ্র খোলা দরকার। সম্ভব হইলে সেই সব কেন্দ্র সংখ্যালঘুদের দিয়াই চালনা করিতে পারিলে ভাল হয়। কাজগুলি অসাধ্য নয়। কিন্তু সে জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা চাই। দেশের ১৪ শতাংশ মানুষকে তমসা হইতে জ্যোতির অভিমুখে টানিয়া লইতে গেলে এবং সংখ্যাগুরুর সহিত সমানাধিকার ভোগ করার অধিকার মঞ্জুর করিতে গেলে সদিচ্ছা ছাড়া সংখ্যাগুরুর রাষ্ট্রের উপায় নাই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.