৪৮ ঘণ্টাও কাটল না। আরও এক বার রাজনৈতিক সমাবেশের জেরে অবরুদ্ধ হল শহরের প্রাণকেন্দ্র। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলের এক দিকে এ দিন সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিলেন বিজেপি-র নেতারা। কিন্তু সমাবেশ কার্যত হয়েছে মেট্রো চ্যানেলের দু’দিক আটকে।
শুধু তা-ই নয়, ওই সমাবেশে আসা লোকজন ধর্মতলার চৌমাথায় বসে পড়ে রাস্তা আটকে রাখলেন পুলিশের সামনেই। চৌমাথায় দাঁড় করিয়ে রাখা হল সমাবেশে লোকজন নিয়ে আসা বাস, মিনিবাসও। যার জেরে তীব্র যানজট হয় মধ্য কলকাতার প্রায় সব রাস্তায়। নিত্যযাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে।
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ জানায়, খাস ধর্মতলা আটকে সমাবেশ হওয়ার ফলে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ সে সময়ে বন্ধ ছিল। ফলে, মৌলালির দিক থেকে আসা হাওড়ামুখী কোনও যানবাহনকে ওই রাস্তা দিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। তার বদলে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় জওহরলাল নেহরু রোড, মেয়ো রোড দিয়ে। কিন্তু মিছিলে লোক আনার বাস, মিনিবাস জওহরলাল নেহরু রোডের একটি বড় অংশ আটকে দাঁড়িয়ে থাকার ফলে ওই রাস্তাতেও যানবাহনের গতি শ্লথ হয়। |
রাস্তা আটকে রাজনীতি। বুধবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র |
একই ভাবে দফায় দফায় মিছিলের জেরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও ব্যাহত হয় যান চলাচল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ পর্যন্ত গড়ায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের যানজট। লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের কর্মীরা জানান, সমাবেশের জেরে এপিসি রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, ক্রিক রো, লেনিন সরণি, এসপ্ল্যানেড রো (ইস্ট), গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়েও দফায় দফায় আটকে পড়ে বিভিন্ন রুটের বাস, মিনিবাস। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ সমাবেশ শেষ হলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে বিকেল পাঁচটা বেজে যায়।
তবে কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, খোদ ধর্মতলার চৌমাথা আটকে গেলেও যান চলাচল একেবারে স্তব্ধ হয়নি। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি জানান, দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য বেশ কিছু বাস, মিনিবাস পুলিশ আগেই ভাড়া নিয়েছে। সেই সব যানবাহন ধর্মতলার দিকে আসেনি। তাই এস এন ব্যানার্জি রোডের মতো রাস্তাও এ দিন দুপুরে অনেক ফাঁকা ছিল। উপনির্বাচনের জন্য বন্ধ ছিল দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র এলাকার অনেক স্কুল, অফিসও।
মানুষের ভোগান্তির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “মানুষের দুর্ভোগ হয়ে থাকলে দুঃখিত। আসলে, সমাবেশে যে পরিমাণ লোক হবে আশা করেছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি ভিড় হয়েছিল।” |