রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের কলকাতা সফরের জেরে মঙ্গলবার রাতে ভুগতে হল ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস ব্যবহারকারী নিত্যযাত্রীদের। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্রপতির কনভয় যাবে বলে ওই রাতে কাঁকুড়গাছি, ফুলবাগান, বেলেঘাটা, চিংড়িহাটা, পার্ক সার্কাস থেকে বাইপাসে ওঠার মুখে যানবাহনকে কমবেশি পৌনে এক ঘণ্টা আটকে রাখে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। আরও অভিযোগ, কত ক্ষণ পরে ওই সব যানবাহনকে বাইপাসে উঠতে দেওয়া হবে, তা-ও জানাননি ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা।
কী হয়েছিল ওই রাতে?
সল্টলেকের বাসিন্দা তপোব্রত সান্যাল জানান, তিনি গাড়িতে যাচ্ছিলেন বেলেঘাটা মেন রোড ধরে। রাত ১০টা ২৫ মিনিটে বাইপাসের সংযোগস্থলের কাছে পৌঁছে তিনি দেখেন, সামনে গাড়ির লম্বা লাইন। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, ট্রাফিক সিগন্যালে ওই সব গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু মিনিট পনেরো পরেও কোনও গাড়ি নড়ছে না দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে গিয়ে তিনি দেখেন, ট্রাফিককর্মীরা বাইপাসের সংযোগস্থলে ব্যারিকেড করে রেখেছেন।
ব্যারিকেড কেন?
তপোব্রতবাবুকে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতির কনভয় চলে গেলেই গাড়ি ছাড়া হবে। তিনি বলেন, “সেই কনভয় পার হয় রাত সওয়া ১১টার পরে।” একই অভিজ্ঞতা হয়েছে ফুলবাগান, কাঁকুড়গাছি বা পার্ক সার্কাস-বাইপাস মোড়ে বাস বা গাড়িতে বসে থাকা অনেকেরই।
গাড়িগুলিকে অত ক্ষণ দাঁড়ি করিয়ে রাখা হয়েছিল কেন?
লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে বাইপাসের ধারে একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। হোটেল থেকে তাঁর বেরোনোর কথা ছিল রাত সাড়ে ১০টায়। নিরাপত্তার কারণে ১০ মিনিট আগে বাইপাসে ওঠার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে যানবাহন আটকে দেয় ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু রাত পৌনে ১১টা বেজে যাওয়ার পরেও রাষ্ট্রপতির কনভয় ওই হোটেল থেকে বেরোচ্ছে না দেখে ট্রাফিককর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, গাড়িগুলিকে আটকে না-রেখে এ বার যেতে দেওয়া হবে। কারণ, রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্সও আটকে থাকতে পারে। রাত ১১টা ১০ মিনিটের কিছু আগে জানা যায়, সওয়া ১১টায় রাষ্ট্রপতির কনভয় হোটেল থেকে বেরোবে। তাই ১১টা ১০ মিনিট বাজতেই বাইপাসে ওঠার মোড়গুলিতে আবার যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। যান চলাচল ফের শুরু হয় ১১টা ২০ মিনিটে।
ট্রাফিককর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, পৌনে এক ঘণ্টা নয়। যানবাহন আটকে রাখা হয়েছিল ২৫ মিনিট থেকে আধ ঘণ্টা।
তা হলে শহরে ভিভিআইপি এলেই কি এ ভাবে দিনেদুপুরে, রাতবিরেতে ভুগতে হবে মানুষকে?
ট্রাফিককর্তারা জানান, দেশের সব বড় শহরেই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের সময় ১০-১৫ মিনিট রাস্তা আটকে রাখা হয়।
যে-সব শহরে বাড়তি বা বিকল্প রাস্তা রয়েছে, সেখানে ঘুরিয়েও দেওয়া হয় যানবাহন। ট্রাফিককর্তাদের মতে, কিন্তু দিল্লি বা অন্য শহরের তুলনায় কলকাতায় বিকল্প রাস্তা কম। তাই...। |